আমাদের সমাজে ডায়াবেটিস রোগটি প্রায়ই অনেকের ক্ষেত্রে শোনা যায় । কেন হল ,কি কারণে হল এসব বিষয় তারা অনুসন্ধান করেন । কিন্তু আগে যদি এই বিষয়ে জানা থাকে তাহলে এই রোগটা থেকে দূরে থাকা যেত। কারণ কিছু আছে । কি সেই কারণ এবং তার বিস্তারিত বিবরণ নিয়ে আজকে আলোচনা করব ।
ডায়াবেটিস হলো একটি অস্বাস্থ্যকর অবস্থা, যেখানে শরীরে ইনসুলিন নামক হরমোন প্রস্তুত হয় না অথবা তা যদি থাকেও ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। এর ফলে রক্তে গ্লুকোজ একত্রিত হয় এবং উচ্চ মাত্রায় থাকে, যা বিভিন্ন সময় শারীরের বিভিন্ন অংশে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। যদিও ডায়াবেটিস ছোঁয়াচে রোগ নয় ।
অর্থাৎ আমাদের শরীরের যে অগ্ন্যাশয় আছে তার ভিতর আইলেট অব ল্যাঙ্গারহ্যানস নামে একটি গ্রন্থি আছে তার থেকেই ইনসুলিন নিঃসৃত হয়। আর এই ইনসুলিন নামক হরমোনটি শর্করার পরিমাপ নিয়ন্ত্রণ করে । এই ইনসুলিন প্রয়োজন মত তৈরি না হলে রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়।
ডায়াবেটিস কত প্রকার ?
ডায়াবেটিসের প্রধান দুটি ধরণ হলো টাইপ 1 এবং টাইপ 2 ডায়াবেটিস।
টাইপ 1 ডায়াবেটিস : প্রস্তুত হতে থাকা ইনসুলিন হয়ে উঠতে পারে না অর্থাৎ দেহে তৈরি হয় না । কারণ শরীরের কোন অংশ একটি কারণে ইনসুলিন নির্মাণ করতে অক্ষম হতে পারে।
টাইপ 2 ডায়াবেটিস : ইনসুলিন উৎপাদনে সমস্যা হতে পারে এমনকি উৎপাদন হলেও তা হতে পারে আংশিক এবং আবারও শরীর ইনসুলিন সঠিকভাবে ব্যবহার করতে অক্ষম হতে পারে। আবার স্থায়ী ঘাটতি হতেও পারে ।
ডায়াবেটিস এর লক্ষণসমূহ কি কি ?
ঘনঘন প্রস্রাব: ডায়াবেটিসের একটি লক্ষণ হলো ঘন ঘন প্রস্রাব । এখন প্রস্রাব করে আসলেন দেখা গেল একটু পরেই আবার প্রস্রাবের বেগ পাবে ।
পিপাসা : অধিক পরিমাণে পানি পান করার ইচ্ছা জাগতে পারে । তবে কাজ করতে করতে পানি পিপাসা পেলে অন্য কথা।
ক্ষুধা: অন্য সময়ে যে ক্ষুধা থাকত তার থেকে ক্ষুধার পরিমাণ বেড়ে যাবে ।
ওজন কমে যাওয়া : দিন দিন রোগীর ওজন কমে যাবে । পর্যাপ্ত খাবার খেলেও কমে যাবে ।
দুর্বল: রোগী আস্তে আস্তে দুর্বল হয়ে পড়বে । কেননা রোগী খাবার খাওয়া সত্ত্বেও কাজ হচ্ছে না।
ক্ষতস্থান: ডায়াবেটিস রোগীদের অন্যতম প্রধান লক্ষণ হল শরীরের কোথাও কাঁটা ছেঁড়া ব ক্ষত না শুকানো । সেই সাথে চামড়া খসখসে ও রুক্ষ হয়ে যাওয়ার মত লক্ষণ প্রকাশ পায়।
ডায়াবেটিস এর কারণ কি ?
কারণ অনেক আছে । আগে মনে করা হতো যে ডায়াবেটিস শুধু মাত্র বয়স্কদের বেলায় হয় । কিন্তু কথাটি সত্য নয় । যেকোন বয়সে মে কারো হতে পারে । কিছু কারণ নিচে দেওয়া হল:
১. পরিশ্রম না করা : দিনের বেশিরভাগ সময় যারা বসে থাকেন বা একেবারে কোন কাজই করেন না তাদের ক্ষেত্রে সম্ভাবনার মাত্রা বেশি ।
২.চিনির মাত্রা বেশি : শরীরে ইনসুলিনে চিনির মাত্রা বৃদ্ধি পেলে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে । এটা হয় সাধারণত ক্যালরি এবং ফ্যাটের পরিমাণ বেড়ে গেলে আর এটা হয় জাঙ্কফুড মাত্রাতিরিক্ত খেলে ।
৩. বংশগত: বংশের কারো যদি ডায়াবেটিস থাকে তাহলে পরবর্তী প্রজন্মের হতে পারে । মা, বাবা এমনকি দাদা,দাদি, নানা,নানির থাকলেও হতে পারে ।
৪. স্থুলতা: স্থুলকায় ব্যক্তিদের ডায়াবেটিসের ঝুঁকি থাকে ।
ডায়াবেটিস হলে করণীয় কি ?
করণীয়: ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে কিছু করণীয় হতে পারে একেবারে নিরাময় করা যায় না কিন্তু নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়:
খাদ্য ও পোষণ: আপনার খাদ্য সংগঠন করতে মনিবদ্ধ থাকুন এবং পোষণের জন্য সঠিক পরামর্শ পেতে চেষ্টা করুন। স্বাস্থ্যকর খাদ্য এবং প্রতিনিয়ত ব্যায়াম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ব্লাড সুগার মনিটরিং: নিজের ব্লাড সুগার স্তর নিয়ন্ত্রণে রাখতে রোজ বা প্রয়োজনে ব্লাড সুগার মনিটর করুন এবং চিকিৎসকে মাপানো ডেটা দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
ঔষধ প্রস্তুতি এবং ব্যবহার: আপনার ডায়াবেটিস কন্ট্রোল করতে ঔষধের নিয়মিত ব্যবহার করুন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসরণ করুন।
নিয়মিত চেকআপ: নিয়মিতভাবে ডাক্তারের সাথে মোবাইল করুন এবং নিয়মিতভাবে চেকআপ করুন, তাতে আপনার স্বাস্থ্য অবস্থা মনিটর করা হবে।
আপনি যদি ডায়াবেটিস সম্পর্কে আরও জানতে চান বা কোনো ব্যক্তিগত পরামর্শ পেতে চান, তাদের সাথে কথা বলুন এবং আপনার চিকিৎসকের সাথে কোনো পরিবর্তনের আগে তাদের সাথে আলাপ করুন।এই রোগ নিরাময় যোগ্য নয় । তাই আগের ভাগেই সাবধান হউন ।