তেঁতুল টক জাতীয় ফলের একটি । এর নাম শুনলেই জিভে পানি চলে আসে। আর যদি খাওয়ার উদ্দেশ্যে সামনে আনা হয় তাহলে কি হবে ? একটু হলেও মুখে দিবে । কারণ এই তেঁতুলের লোভ আমরা কেউই সামলাতে পারি না । আর যদি মেয়েদের দেয়া হয় তবে তো কথাই নেই ।
আমাদের সমাজে একটি প্রচলিত ধারণা আছে যে তেঁতুল খেলে নাকি রক্ত পানি হয়ে যায়। আসলে কথাটি সত্য নয় । তবে এটা তো সত্যি যে, যে কোন কিছুরই over limit হয়ে গেলে তার পরিণতি ভালো হয় না । অর্থাৎ ভাল হউক বা খারাপ অতিরিক্ত কোন কিছুই ভাল নয় । তাই আজকে শুধুমাত্র তেঁতুলের উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। আর পরবর্তী পর্বে এর কিছু ক্ষতিকর দিক নিয়ে আলোচনা করব। ক্ষতিকর কেন বললাম তা আগামী পর্বে বলা হবে ।
এবার দেখা আসি । তবে এটা না বললেই নয় । প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা তেঁতুলে মোট খনিজ পদার্থ ২.৯ গ্রাম বিদ্যমান, আর খাদ্যশক্তি ২৮৩ কিলোক্যালোরি।
তাছাড়া আমিষ ৩.১ গ্রাম, চর্বি ০.১ গ্রাম, শর্করা ৬৬.৪ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ১৭০ মিলিগ্রাম, আয়রন ১০.৯ মিলিগ্রাম, ক্যারোটিন ৬০ মাইক্রোগ্রাম ও ভিটামিন সি ৩ মিলিগ্রাম রয়েছে।
উপকারিতা:
১. মেদ কমায় : যারা মেদের সমস্যায় ভুগছেন তারা প্রতিদিন কিছু না কিছু তেঁতুল খান । কেননা তেঁতুল আপনার শরীরের মেদ কাটবে ।
২. হার্ট সুস্থ রাখে : তেঁতুল হার্টকে সচল রাখে। রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইড নামক এক ধরনের ফ্যাট জমতে দেয় না। তেঁতুল থাকা উচ্চ পটাশিয়াম রক্ত চাপ কম করতে সাহায্য করে।
৩. ডায়বেটিস কন্ট্রোল করে :
যারা ডায়াবেটিসের রোগী তাদের জন্য মিঠা জাতীয় খাদ্য একেবারেই নিষিদ্ধ । তবে তারা টক জাতীয় খাদ্য খেতে পারেন । আর এই তালিকায় রয়েছে তেঁতুল । আর তেঁতুলের বিচি ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক । শুধু তাই নয় রক্তে চিনির মাত্রাও ঠিক রাখে। তাই টক হিসেবে তেঁতুলকে বেছে নিন।
৪. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় : রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে তেঁতুলের ভূমিকা অনেক ।আর তাইতো ঋতু পরিবর্তনের সময় তারা সর্দি-কাশিতে ভোগেন তারা তা থেকে রেহাই পেতে গরম পানিতে তেঁতুল ও গোলমরিচ মিশিয়ে খেলে দারুণ উপকার পাবেন ।
তেঁতুলে থাকা ভিটামিন সি আর অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কয়েকগুণ বাড়ায় ।
৫. জন্ডিসের জন্য : জন্ডিস কতটাই না মারাত্মক ।এতে যেমন ভোগান্তি আছে তেমন প্রচুর টাকা পয়সাও নষ্ট হয় । আপনি জন্ডিস রোগের প্রতিরোধে তেঁতুলকে বেছে নিতে পারেন। তেঁতুল জন্ডিস রোগে জন্য উপকারি।
৬. ক্যান্সার রোধে: ক্যান্সার রোধ করে তেঁতুলে উচ্চ পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকায় কিডনি ফেলিওর এবং কিডনি ক্যান্সার এর মত মরণঘাতী রোগকে রোধ করতে সাহায্য করে।
৭. ত্বক উজ্জ্বল: আপনি কি চান আপনার ত্বক উজ্জ্বল হউক ? তাহলে আজই দেরী না করে তেঁতুল কে বেছে নিন ।আপনার ত্বক উজ্জ্বল করুন । তেঁতুল থাকা হাইড্রক্সি অ্যাসিড ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সহায়ক।
৮. কোলেস্টেরল কমায় : যারা কোলেস্টেরল সমস্যায় ভুগছেন তারা তেঁতুল খান । কোলেস্টেরল পালাবে ।
৯. লিভার সুরক্ষিত রাখে :
গবেষণায় দেখা গেছে তেঁতুল লিভারকেও ভালো রাখে। পরীক্ষা করে দেখা গেছে নিয়মিত তেঁতুল পাতা ব্যবহার করে উচ্চ মাত্রায় মদ্যপ্য ব্যক্তির নষ্ট হয়ে যাওয়া লিভার অনেকটা সেরে উঠেছে । তাই লিভার নষ্ট হয়ে গেছে এমন লোকেরা এখন থেকে তা সেবন করতে পারেন । হয়তো বা আশার আলো দেখতেও পারেন ।