বাতের ব্যথা হলে কি করবেন ?

আমরা অনেকেই ব্যথায় ভুগে থাকি । হাত ব্যথা,পা ব্যথা,মাথা ব্যথা,কোমর ব্যথা ইত্যাদি আরও কিছু । ঠিক এমনই এক ব্যথা ‌প্রায়ই অনেকের শরীরে অনুভব হয় যখন তার শরীরে বাতের প্রভাব দেখা যায় । এই বাতের ব্যথায় ছটফট করতে করতে ‌দিন কাটে তাদের । প্রচলিত আছে যে, অমবশ্যা, পূর্ণিমা কিংবা আরও কিছু দিন আছে ঐ সময় নাকি বাতের ব্যথা ‌শুরু হয় । আবার যখন এগুলো সময়গুলো থাকে না তখন বাতের‌ ব্যথাও থাকেনা । কিন্তু এই ধারণা কতটুকু বিজ্ঞান সম্মত তা বিবেচ্য বিষয়।‌ তবে বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে কি না সেটা দেখার বিষয়। এর আগে "বাত ব্যথায় ভুগছেন ? সহ্য করতে পারছেন না"- শিরোনামে একটি লেখা লিখেছি । সেটাও দেখতে পারেন । 


                              

arthritis pain






 তো এখন কথা হল বাত কি ? সেটা তো‌‌ জানা দরকার । তাহলে আসুন জেনে নেই বাত কি ?বয়স্ক মানুষ কিংবা অল্প বয়সে আঘাত পাবার পর অস্থিসন্ধি যখন ক্ষয় হয়ে তার স্বাভাবিক কার্যকলাপ করতে না পারে তখন তাকে বাত বলে। আর বাত ব্যথা হল আমাদের শরীরের হাড়, মাংস, অস্থিসন্ধিতে দীর্ঘমেয়াদি যে ব্যথা অনুভূত হয় ।‌ 




তবে কিছু বিষয় আছে যেগুলো হয় শরীরের অঙ্গভেদে বাতের ব্যথা অনুভূত হয় । এবার আসুন কোথায় কোথায় হয় বাত ব্যথা ? উত্তর জেনে নিন ।




১। কাঁধে ব্যথাঃ কাঁধ ব্যথা বাত ব্যথার একটি সাধারণ উপসর্গ। এতে মাংশপেসিতে তীব্র ব্যথা অনুভুতি হয় এবং এই ব্যথা ঘাড় পর্যন্ত প্রসারিত হয়।






২।‌ হাঁটুতে দুর্বলতাঃ বাত ব্যথা আপনার হাঁটুতে হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয় ,জয়েন্টে নড়াচড়া সমস্যা থেকে শুরু করে হাটুর মাংসপেশি শক্ত এবং ফোলাভাব সৃষ্টি করতে পারে।






৩। কব্জি অসাড়তাঃ বাত ব্যথায়‌ কব্জির জয়েন্টে প্রভাব ফেলতে পারে, যার ফলে হাড়ে ব্যথা, অসাড়তা দেখা দেয় এমনকি কব্জিগুলিকে নাড়াচাড়া করার সময় কিছুটা যন্ত্রণা অনুভব হয়।








৪।‌ পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা ও অসম অবস্থানঃ যখন বাতের ব্যথা গোড়ালিতে প্রভাব পরে তখন সমানভাবে হাঁটা হাঁটি করা কঠিন শুধু তাই নয় দীর্ঘ সময় ধরে দাঁড়িয়ে থাকাও কষ্টকর ।






৫।‌ বুক ব্যথাঃ দীর্ঘমেয়াদী হলে ফুসফুসকে ক্ষতিগ্রস্ত করে বুকে ব্যথা শুরু হতে পারে ।




লক্ষণ কি আছে ? 




হ্যা আছে । আর তা হল 




১। দেহের বিভিন্ন জায়গাতে লালচে ভাব দেখতে পাওয়া ।


২। দেহের বিভিন্ন অংশ ফুলে যাওয়া।


৩।‌‌ মাংসপেশি শক্ত হওয়া 


৪।‌ জয়েন্টের চারপাশে অস্বাভাবিক অবস্থা হয়ে যাওয়া


৫। জয়েন্ট উষ্ণ অনুভব হওয়া।


৬।‌ শরীরের কাজেকর্মের গতি হ্রাস পাওয়া।






বাতের ব্যথা কেন হয় ? কারণ হিসেবে যা ধরা হয় ।‌




১। পারিবারিক ইতিহাসঃ কিছু বাত রয়েছে তা পারিবারিকভাবে হতে দেখা যায় , তাই আপনার বাবা-মা , ভাইবোনের কারো হয়ে থাকলে আপনার বাত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।






২। বয়সঃ বয়স বাড়ার সাথে সাথে‌ বাতের ঝুঁকি বাড়ে।






৩। লাইফস্টাইলঃ ধূমপানের কারণে আবার ব্যায়ামের অভাবে বাতের ঝুঁকি রয়েছে। 






যাই হউক বাত নিয়ে করণীয় বিষয়ে যাওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জেনে নেয়া দরকার । আর তা হল :- 






১। প্রাথমিক পর্যায়ে বাত অদৃশ্য রোগ হিসেবে বিবেচিত হয় । তাই রোগীর নিজেকেই শারীরিক লক্ষণগুলো সম্পর্কে ধারণা থাকা দরকার। 




২। ভিন্ন ভিন্ন বয়সি রোগীদের মধ্যে বাতের প্রভাব ভিন্ন হতে দেখা যায় ।




৩। বাতের ব্যথা উপশমে ব্যায়ামকে উৎকৃষ্ট কার্যকরী ওষুধ হিসেবে ধরে নিতে পারেন । 






৪। ওজন বেশি থাকলে তা কম‌ করুন । এতে বাত নিয়ন্ত্রণ করা অনেকাংশে সম্ভব।






৫। যারা বাতের রোগী‌ তাদের‌ হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা অন্যদের থেকে বেশি। 






৬। বাতের রোগীদের ধীরে ধীরে ফিব্রোমায়ালজিয়া কিংবা লুপাসের মতো রোগও হতে পারে।






৭। বাত থেকে পুরোপুরি নিরাময় সম্ভব, যদি প্রথমেই তা শনাক্ত এবং চিকিৎসা শুরু করে দেয়া যায়।




করণীয় কি‌‌ ? 






১। ব্যায়ম করুন । যত পারেন তত




২।‌ ডাক্তার দেখান, আর যা পরীক্ষা করা দরকার তা করান এবং সে অনুযায়ী ঔষধ সেবন করুন ।‌




৩।‌ আর বাত ব্যথা নিরাময়ে যে খাদ্য গুলো উপযোগী তা খান । এটা নিয়ে একটা লেখা লিখব আশা করছি । 




৪।‌‌ গরম পানির সেঁক নিতে পারেন।  


 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম