এইডস কি ? তার বিস্তার , লক্ষণ,প্রভাব ও প্রতিরোধ ।

এই পৃথিবীতে কত রোগই না আছে । কিছু ভালো হয় আবার কিছু হয় না । কিছু ছোঁয়াচে আবার কিছু ছোঁয়াচে নয় । আবার কিছু এই দুইয়ের মধ্যে অবস্থান করে । কিছু রোগ আছে ভালো হয় তবে তাতে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হয় । আবার অনেক রোগ যার লক্ষণ অল্প সময়ের মধ্যেই বোঝা যায় । আবার অনেক সময় লক্ষণ গুলো সুপ্ত অবস্থায় থাকে । প্রকাশ পেতে অনেক সময় লাগে ‌ । 



Aids




আজকে আমরা এমন এক মানব বিধ্বংসী রোগ নিয়ে আলোচনা করব তা সম্পর্কে না জানলেও নয় । বলছি এইডস এর কথা । পুরোপুরি জানা না থাকলেও অনেক কিছু হলেও জানেন । তবে সকলের এ রোগ সম্পর্কে পুরোপুরি জানা দরকার । তাহলে প্রশ্ন হল এইডস কি ? 




এইডস কি ? 




মানব দেহের মারাত্মক ঘাতক ব্যাধি যা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে নষ্ট করে দেয় । ১৯৮১ সালে প্রথম আবিষ্কৃত হয় । এটি যে কোন রোগের জন্য দায়ী কেননা দেহের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট করে দেয় ‌। অর্থাৎ আক্রান্ত ব্যক্তি সহজেই যে কোন রোগ যেমন: ডায়রিয়া,নিউমোনিয়া,যক্ষ্মা ইত্যাদিতে আক্রান্ত হতে পারেন। এইডস হলো Acquired Immunodeficiency Syndrome এর সংক্ষেপ রূপ । 




এইডস এর লক্ষণসমূহ কি কি ? 



এইডস এর মূল লক্ষণগুলি হলো:



দেহের ওজন কমে যেতে থাকা 




একটানা এক মাসের বেশি সময় ধরে জ্বর থাকা বা জ্বর জ্বর ভাব থাকা । 





অনেক দিন ধরে শুকনো কাশি থাকা,এটা হতে পারে যক্ষ্মা, সম্ভাবনা বলছি, নিশ্চয়তা দিচ্ছি না। 





দেহের বিভিন্ন স্থানে ব্যথা হতে পারে বিশেষ করে গলায়, মাথায়, ঘাড়ে । 





অতিরিক্ত নতুন রোগ বা সাধারণ অসুস্থতা হয়ে উঠে, যা সাধারণত প্রতিক্রিয়া নয়।




প্রাকৃতিক রোগ নিরাময়ে অক্ষমতা বা দুর্বলতা।




অতিরিক্ত গুঁজান, দুর্বল প্রতিক্রিয়া, চিন্তা, প্রতিক্রিয়ার অক্ষমতা।




অতিরিক্ত ত্বকের পরিবর্তন বা ত্বকের পরিবর্তন ।




সম্ভবত অক্ষমতা, কার্যক্ষমতার হ্রাস বা হ্রাস।




দেহের চুলকানি দেখা যেতে পারে। 




এই লক্ষণগুলি একে অপরের সাথে মিলিয়ে থাকতে পারে এবং বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন ব্যক্তিদ্বন্দ্ব প্রদর্শন করতে পারে। এই লক্ষণগুলো প্রায়শই অসুস্থতার উপস্থিতিতে দ্রুত প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা এবং পরীক্ষা প্রদর্শনের জন্য সূচিত করা হয়।




এইডস কত প্রকার ? 




প্রকার: এই রোগের ধরণ দুই ধরণের হয়: HIV-1 এবং HIV-2। HIV 




কারণ : এইডস হলো একটি মানব উত্তেজনামূলক রোগের সংক্রমণের কারণে হতে পারেন। এই রোগ HIV নামক একটি ভাইরাসের কারণে হয়। এই রোগের কারণে মানব সংক্রামক রোগের বিপন্ন হওয়া অনুযায়ী তার প্রাথমিক রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যায়, যা নামতে পারে সম্পূর্ণভাবে অক্ষম হওয়া এবং এইডস রোগে মৃত্যুর উপায় হতে পারে।এই ভাইরাস মানব শরীরে অবস্থান করে এবং স্থায়ীভাবে শক্তিশালী অসংখ্য মহানিস্টাল প্রতিক্রিয়া তৈরি করে, যা মানবের রোগ প্রতিরোধ পদ্ধতি অস্তিত্ব রাখে। নিচে কিছু কারণ উল্লেখ করা হল : 





১. যৌন মিলন: প্রথমেই যে কথাটা বলতে চাই তা হল এই ,এইডস এর প্রধান কারণ হল অবাধ ও অনিরাপদ যৌন মিলন । কেনন জানেন না সঙ্গীর কি এইডস আছে কি না । আমাদের সমাজে তরুণ তরুণীরা তাদের এই সময়টাতে মিলনের জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠে । আর অনেক করে ফেলে । আর এই সময়টা হল তাদের জন্য danger সময় । কারণ তারা কিছু বোঝে না ‌ ।‌






২. এইডস আক্রান্ত রোগীর রক্ত, হাড় এসব সুস্থ ব্যক্তির দেহে প্রতিস্থাপন করলে । তাই প্রতিস্থাপন এর আগে ডাক্তার পরামর্শ নিন । 




৩. এইডসে আক্রান্ত বাবা যদি মায়ের সাথে মিলন করে তবে মায়ের হতে পারে কিন্তু বাবা থেকে সরাসরি সন্তানে ছড়ায় না । তবে আক্রান্ত মায়ের দুধ পানের ফলে শিশুর হতে পারে । 





৪. HIV জীবাণু রয়েছে এয়ন সুচ সিরিঞ্জ ,যাবতীয় সরঞ্জাম ব্যবহারের মাধ্যমে ছড়াতে পারে ‌ ‌। শুধু তাই নয় একই ব্লেড ব্যবহারের ফলে হতে পারে । কেননা আপনি জানেন না কারো এইডস আছে কি না ‌ । আর পাগল না থাকলে তো কোন সমস্যা নেই । 




৫. আক্রান্ত ব্যক্তির কোন অঙ্গ অন্য সুস্থ ব্যক্তির দেহে প্রতিস্থাপন করলে হতে পারে 




এইডস এর ক্ষেত্রে করণীয় কি ? 





করণীয়: 





HIV এবং এইডস সংক্রমণের প্রতিরোধে কিছু গুরুত্বপূর্ণ করণীয় রয়েছে:






স্বাস্থ্যপরামর্শ এবং টেস্টিং: নিয়মিতভাবে HIV টেস্ট করানো এবং স্বাস্থ্যপরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।





সুরক্ষা মাত্রার ব্যবহার: যখন যৌন যোগাযোগ করছেন তখন পর্যাপ্ত সুরক্ষা মাত্রা ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ। প্রয়োজনে কনডম ব্যবহার করুন । তবে আমি একেবারে তা থেকে নিষেধ করব । কেননা সতর্কতার মার নেই । 





নির্ভরযোগ্য চিকিৎসা: প্রয়োজনে সাম্প্রতিক চিকিৎসা সুবিধা অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানে যেতে হতে পারে।





অবস্থানবিশেষ সতর্কতা: যখন কোনও অবস্থানে অস্থির অবস্থার সম্ভাবনা বা এই রোগ সংক্রমণের ভয় থাকে তখন সতর্ক থাকা গুরুত্বপূর্ণ।





সহানুভূতি ও সমর্থন: এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রতি সহানুভূতি ও সমর্থন প্রদান করা গুরুত্বপূর্ণ।





প্রোটিন ও সহজলভ্য খাবার: পুষ্টিগত খাবার খাওয়া, যেমন প্রোটিন-শস্য ও ফলমূল, দেহের প্রতিষ্ঠান বৃদ্ধি করে এবং দুর্বলতা নিশ্চিত করে।




আদম্যতা এবং নিরাপত্তা: চিকিৎসকের পরামর্শে নির্দিষ্ট ঔষধ নিতে এবং ব্যবহার করার সময় নিরাপত্তার অধিক বিশেষ মনে রাখা উচিত।




মানসিক সান্ত্বনা এবং সহানুভূতি: মানসিক স্বাস্থ্য ও সহানুভূতির জন্য পরামর্শ এবং সহযোগিতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।




শিক্ষা: প্রতিরোধের প্রধান উপায় হল সমাজে এই রোগ সম্পর্কে ধারণা প্রদান করা, সঠিক জ্ঞান অর্জন করা।‌




সুচ, সিরিঞ্জ: আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহার করা সুচ, সিরিঞ্জ দ্বিতীয় বারের জন্য ব্যবহার না করা । তবে জীবাণু মুক্ত করে ব্যবহার করতে হবে । 




দুধ পান : আক্রান্ত মায়ের শিশুর জন্য দুধ পান না করানো । প্রয়োজনে গরুর দুধের ব্যবস্থা করতে হবে । 





প্রতিস্থাপন: আক্রান্ত ব্যক্তির দেহের কোন কিছু অন্য দেহে প্রতিস্থাপন করা যাবে না । 





তবে একটি কথা না বললেই নয় , এ রোগে একবার আক্রান্ত হলে তার মৃত্যু নিশ্চিত । তবে প্রতিরোধ করা যায় ।এই পরামর্শগুলি এইডস বা HIV রোগীদের স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থান উন্নত করার জন্য মৌলিক। এই সহায়তা ও সমর্থন সহজেই প্রয়োজনীয় হতে পারে এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানে সাহায্য করতে পারে যাতে । 




এইডস কি ছোঁয়াচে ? 




এইডস রোগকে একেবারে ছোঁয়াচে বলা যায় না ‌ । কেননা ছোঁয়াচে বলতে আমরা কি বুঝি ? আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির পাশে দাড়ালাম তার স্পর্শ বা তার শ্বাস-প্রশ্বাস এর বাতাস দ্বারা আমার শরীরে এসে পড়ল । অথবা পানি, বাতাস দ্বারাও হতে পারে । এসবের দ্বারা হওয়াকেই আমারা ছোঁয়াচে বুঝি । এক্ষেত্রে এইডস এমন কিছু না ‌। তার স্পর্শ লাগলে, তার সাথে একই থালায় খেলে,তার ব্যবহৃত জিনিসপত্র নাড়াচাড়া করলে এইডস হওয়ার সম্ভাবনা নেই । 




আবার ,'এইডস ছোঁয়াচে রোগ না' - এটাও বলা যায় না ।‌ কেননা আক্রান্ত ব্যক্তির দেহের রক্ত,হাড়, বীর্য এসব প্রতিস্থাপন করলে এইডস হবে । আক্রান্ত মায়ের দুধ পান করলে শিশুর হবে । তাহলে কে বলছে এইডস ছোঁয়াচে রোগ না ? এই দিক থেকে চিন্তা করলে এইডস কে ছোঁয়াচে রোগ বলা যায় । 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম