কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঘরোয়া উপায় ।

কোষ্ঠকাঠিন্য নামটি অবশ্যই আমরা শুনেছি । এটা কি কোন রোগ ? না এটা কোন রোগ না । এখন প্রশ্ন করতে পারেন এটা যদি রোগই না হয় তাহলে এটা কি ? আমি আবারও বলছি এটা বিশেষ কোন রোগ না । এটা একটা যন্ত্রণাদায়ক সমস্যার নাম । যখন কারো শক্ত পায়খানা হয় অথবা দুই বা তারও বেশি দিন পায়খানা না হলে , তখনই তাকে কোষ্ঠকাঠিন্য বলা হয় । 


Constipation, কোষ্ঠকাঠিন্য





আবার অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে তারা দীর্ঘক্ষণ ধরে টয়লেট বসে থাকেন , এ বুঝি এখন পেট পরিষ্কার হবে , কিন্তু হয় না । তখন বুঝতে হবে এটা কোষ্ঠকাঠিন্য । কোষ্ঠকাঠিন্য যেমন যন্ত্রণাদায়ক তেমনি বিরক্তিকর। আর এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে রয়েছে ঘরোয়া উপায় । অর্থাৎ,'কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঘরোয়া উপায় ' । তার আগে আমরা জেনে নেব কেন হয় ? 



কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার কোন কারণ আছে কি ? 



কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার কারণগুলি বিভিন্ন হতে পারে এবং এটি প্রভাবিত করতে পারে বিভিন্ন কারণে। কিছু মৌলিক কারণের মধ্যে রয়েছে যা নিম্নরূপ:





১. পায়খানা বেগ চেপে রাখা : কেউ কেউ কোন‌ না কোন কারণে পায়খানার বেগ চেপে রাখেন । এতে তেমন নিজেরো কষ্ট হয় তেমনি কোষ্ঠকাঠিন্য নামক সমস্যাটি দেখা দেয় । 




২. পানি শোষিত হওয়া: এখানে পানি শোষিত হওয়া মানে বৃহদন্ত্রে অপাচ্য খাদ্যাংশ থেকে অথবা পৌষ্টিক নালীর মধ্য দিয়ে খাদ্যের অপাচ্য অংশ ধীরে ধীরে গমনের মল থেকে পানি শোষিত হওয়া । আর সেটা যদি হয় অতি মাত্রায় তখনই কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়। 




৩. পরিশ্রম না করা: পরিশ্রম না করলে কত রোগই শরীরে বাসা বাঁধে । তার মধ্যে কোষ্ঠকাঠিন্য একটি । 




৪. আন্ত্রিক গোলযোগ: কোন কারণে অন্ত্রে সমস্যা দেখা দিলে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে।





৫. কোলন মাংসপেশী সংকোচন: কোলন মাংসপেশি সংকোচন হলে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয় । তবে হ্যা সেটা যদি স্বাভাবিক এর তুলনায় ধীরে ধীরে হয়। 






৬. আঁশ জাতীয় খাবার না খাওয়া: আঁশ জাতীয় খাদ্য যদি একেবারে না খাওয়া হয় তবে কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার সম্ভাবনা অনেক গুন বেড়ে যায়। 




৭. কম পানি পান : আমরা অনেকেই কম পানি পান করি । আর এই কম পানি পান করার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয় । 



এছাড়াও আরও অনেক কারণ রয়েছে । 




 কোষ্ঠকাঠিন্য হলে কি কি সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে ? 





কোষ্ঠকাঠিন্য হলে অনেক সমস্যা হতে পারে। এই যেমন ধরুন মল ত্যাগ করতে কষ্ট হবে । আর এতেই পেটে অস্বস্তিকর অবস্থা হতে শুরু করে পেট ব্যথা ও নানা ধরনের অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয় । দীর্ঘমেয়াদি কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে হার্নিয়াসহ বিভিন্ন জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে। 




কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কোন কোন খাবার খাওয়া যেতে পারে ? 




কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কিছু খাবার পরিবর্তন করা যেতে পারে এবং কিছু খাবার যোগ করা যেতে পারে, যা ইনটেস্টাইনের স্বাস্থ্যকর হতে সাহায্য করতে পারে। এটি কিছুটা ব্যক্তিগত হতে পারে এবং রোগীর সাথে ডাক্তারের পরামর্শের ভিত্তিতে হতে হবে ।উদাহরণ হিসেবে বলা যায়। যেমনঃ




আঁশ ধারণ করা খাদ্য: আপেল, নারকেল,আম, কলা পেঁপে,আনারস, সবজি এবং সবজির চালুর অংশ হিসেবে আঁশ ধারণ করা হতে পারে। এটি ইনটেস্টাইনের স্বাস্থ্যের জন্য গুণ কারী।





ভিটামিন এ ও ভিটামিন ডি: ভিটামিন এ ও ডি আপনার ইনটেস্টাইনাল হেলথকে সাহায্য করতে পারে। ভিটামিন এ প্রাচীন হারিতে কামোটোস কোষকে বুস্ট দেয় এবং ভিটামিন ডি ক্যালসিয়াম স্তর বৃদ্ধি করতে সাহায্য করতে পারে।




আর কি কি খাওয়া যাবে না ? 




কোষ্ঠকাঠিন্য বা ইনটেস্টাইনাল স্টিনোসিসের ক্ষেত্রে কিছু খাবার এবং পদার্থ এড়াতে দেখা হতে পারে যা সহজে পচাতে সক্ষম হয় না বা অস্তিরণে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।যেমন :





তেল, ভাজা ও অতিরিক্ত ধানের পণ্য: বেশী তেল বা তৈরি ভাজা খাদ্য এবং অতিরিক্ত ধানের পণ্য কোষ্ঠকাঠিন্যকে বাড়াতে পারে।





গ্যাসোজেনিক খাদ্য: ক্যাবেজ, ব্রোকলি, কলিফ্লাওয়ার, বাণয়াক, বটমলেভেজ, ডাল, ওটগারলিক ইত্যাদি গ্যাসোজেনিক হতে পারে, যা ইনটেস্টাইনে ব্যবহার করা উচিত না।




মিষ্টি ও চিনির ব্যবহার হানিতে: অতিরিক্ত মিষ্টি ও চিনি কোষ্ঠকাঠিন্যকে বাড়াতে সাহায্য করতে পারে এবং হানি অন্যের সাথে অমিল করতে পারে।





এই সময়ে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে কোনও পদার্থ এবং খাদ্য যোগ করা গুরুত্বপূর্ণ, এবং রোগীর সাথে প্রতিবেদন করা উচিত।




আর কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে 




কোষ্ঠকাঠিন্য বা ইনটেস্টাইনাল স্টিনোসিসের জন্য কিছু পদক্ষেপ নিতে হতে পারে যা রোগীকে সাহায্য করতে পারে। তারা হতে পারে:





ডাইট পরিবর্তন: ফাইবার ধারণ করা খাদ্য, যেমন ফল, সবজি, ওটগারলিক, এবং পোষ্ট, বাড়াতে পারে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যকে সাহায্য করতে পারে।





পোষ্ট-ওটগারলিক সাপ্লিমেন্টস: ডাক্তারের পরামর্শের ভিত্তিতে পোষ্ট-ওটগারলিক সাপ্লিমেন্টস এবং প্রোবায়টিক সাপ্লিমেন্টস গ্রহণ করা যেতে পারে।





আবশ্যক মিডিকেশন: ডাক্তারের পরামর্শের ভিত্তিতে কোনও প্রয়োজন হলে রোগী যেগুলি ঔষধ নেয় সেগুলি ঠিকমতো খাচ্ছে তা নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ।





ওজন নিয়ন্ত্রণ: যদি রোগী ওজন অতিরিক্ত হয় তবে ওজন নিয়ন্ত্রণ করা গুরুত্বপূর্ণ এবং ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত।





এই পদক্ষেপগুলির মধ্যে কোনটি সবচেয়ে উপযুক্ত হবে তা রোগীর চিকিৎসকের সাথে আলোচনা করতে গুরুত্বপূর্ণ।




 এখন 'কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঘরোয়া উপায় ' গুলো কি কি ? 



বাড়িতে আপনি যে খাবার খেতে পারেন আর তা হল : 




১. ইসবগুলের ভুসি: পায়খানা সহজ হওয়ার জন্য অর্থাৎ মল নরম হওয়ার জন্য ইসবগুলের ভুসির জুড়ি নেই। প্রতিদিন সকালে পরিমিত পরিমাণে কুসুম গরম পানি নিয়ে তাতে ২ চামচ ইসবগুলের ভুসি মিশ্রিত করে পান করতে ভুল করবেন না যেন। রাতে শোয়ার আগেও একই নিয়ম অনুসরণ করুন। 






২. তোকমা:তোকমায় অনেক বেশি পুষ্টি থাকে । তোকমা পানিতে ৩০-৪০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন তারপর খান । দেখবেন ফলাফল হাতের কাছেই। 





৩. টক দই: টক দইয়ে থাকে ল্যাক্টিক অ্যাসিড তা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।তাছাড়া হজমে ভূমিকা পালন করে। তাই টক দই প্রতি বেলা খাওয়ার পর কিছু খেতে পারেন ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম