চেহারায় বয়সের ছাপ দূর করার উপায় ।

অল্প বয়স ,বিয়ে হয়েছে সবে মাত্র কিংবা এক বাচ্চার মা আর এতেই চেহারায় বয়সের ছাপ পড়ে গেল ? মন খারাপ ঠিক এই জন্য ? বয়স বাড়বে, ত্বকে বার্ধক্যের ছাপ পড়বে এটাই তো স্বাভাবিক । কিন্তু আমি যে প্রথমে বললাম যদি এমনটা হয় তাহলে কথা আছে । আর তখন বয়সের ছাপ পড়ার কোন সময়ই না । 



Signs of aging





তাছাড়া যদি অন্য ভাবে বলি বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের চেহারায় বিভিন্ন পরিবর্তন দেখা যায়। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনগুলোর মধ্যে একটি হলো বয়সের ছাপ পড়ে যাওয়া। এই ছাপ সাধারণত ত্বকের উজ্জ্বলতা হ্রাস, বলিরেখা, চোখের নিচে কালি ও চামড়ার ঝুলে যাওয়ার মাধ্যমে প্রকাশ পায়। অনেকেই ভাবেন এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, তবে আধুনিক জীবনধারা ও সচেতনতার মাধ্যমে আমরা চেহারার বয়সের ছাপ অনেকাংশে প্রতিরোধ ও হ্রাস করতে পারি।




আপনি হয়তোবা মনে করবেন যে এটা আর কি ? কিন্তু আপনিই বলুন তো দেখতে কেমন দেখায় অন্তত নিজের কাছে আর নিজের স্বামীর কাছে ? নিজের স্বামীকে জিজ্ঞেস করবেন এটা । তবে হয়তো অনেক স্বামীই বিষয়টা এড়িয়ে একটু ঘুরিয়ে বলবে । অথবা সঙ্গীর মনে রক্ষা করবে । আর যারা এমন হীনমন্যতায় ভোগছেন যে,এখন কি করা যায় তাদের জন্য আজকের এই লেখা । 





আপনি হয়তো এই বিষয়টা দেখেছেন যে অনেক মহিলা এমনও আছেন তাদের দেখে মনে হয় ২০-২৫ বছরের যুবতী । বয়সের ছাপ কিন্তু পড়েনি । অথচ তাঁদের ছেলে বা মেয়ের বিয়ের জন্য পাত্র - পাত্রী খোঁজা হচ্ছে কিংবা মেয়ের বিয়ে দিয়ে দিয়েছে । এখন আপনি বলতে পারেন তারা এমন কি করেন যে বয়সের ছাপ পড়েনি ? প্রথম একটা কথাই বলব আর সেটা হল লাইফস্টাইল।‌ 




এখন বয়সের ছাপ দূর করতে কি কি খাবেন ? 





ত্বকে বার্ধক্যের ছাপ দূর করতে আপনি নিম্নলিখিত খাদ্য পদার্থ অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন:




ফল এবং সবজি: উচ্চ পোষণযুক্ত ফল এবং সবজি খেতে সহায়ক, যেমনঃ কালি সবজি, , পেঁপে, স্পিনাচ ইত্যাদি।




প্রোটিন যুক্ত খাদ্য: মাংস, ডাল, চিংড়ি, মাছ ইত্যাদি খাদ্য তালিকায় রাখুন ।




ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার: ভিটামিন A, C, এবং E যুক্ত খাবার খেতে সহায়ক, যেমনঃ গাজর, কলিফ্লাওয়ার, মরিচ ইত্যাদি।





ওমেগা-3 ফ্যাটি এসিড যুক্ত খাবার:  ওমেগা-3 ফ্যাটি এসিড যুক্ত খাবার সহায়ক হতে পারে ।





পর্যাপ্ত পানি: প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা গুরুত্বপূর্ণ । আর এতে আপনার শরীরের কার্যকলাপ ঠিক থাকবে ।প্রতিদিন অন্তত ৮ গ্লাস পানি পান করলে শরীর যেমন হাইড্রেট থাকে, তেমনি ত্বকও মসৃণ ও উজ্জ্বল থাকে। পানির অভাবে ত্বক রুক্ষ হয়ে যায় এবং তখন বয়সের ছাপ দ্রুত দেখা দিতে পারে।





 তাত্ত্বিক সহায়ক: পর্যাপ্ত নিদ্রা, স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা, এবং স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট অনুসরণ করা ।





পর্যাপ্ত ঘুম: ঘুম আমাদের শরীরের জন্য পুনরুজ্জীবনের সময়। যারা প্রতিরাতে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমান, তাদের ত্বক অনেক সতেজ ও উজ্জ্বল থাকে। ঘুমের অভাব হলে চেহারায় ক্লান্তি ফুটে ওঠে এবং দ্রুত বয়সের ছাপ পড়ে।




মানসিক চাপ কমানো:চিন্তা ও মানসিক চাপ শরীরের পাশাপাশি ত্বকের ওপরও প্রভাব ফেলে। ক্রমাগত চাপের কারণে কর্টিসল হরমোন নিঃসৃত হয় যা ত্বকের গঠন নষ্ট করে দেয় এবং এতে বয়সের ছাপ স্পষ্ট হয়। 




ধূমপান ও অ্যালকোহল থেকে বিরত থাকা:

ধূমপান ও অ্যালকোহল ত্বকের উপর ব্যাপক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। এগুলো ত্বকের রক্ত সঞ্চালন কমিয়ে দেয়, যার ফলে বলিরেখা এবং অন্যান্য বয়সের ছাপ দ্রুত দেখা যায়। সুস্থ ত্বকের জন্য এই অভ্যাসগুলো বাদ দেওয়া উচিত।



এই গুলো এবং প্রচুর পানি একটি সুস্থ জীবনযাত্রা অনুসরণ করলে ত্বক স্বাস্থ্যকর থাকতে সাহায্য করতে পারে।




ঘরোয়া ভাবে কি কি করবেন ? 




চেহারায় বয়সের ছাপ দূর করার উপায় খুঁজছেন ? আর আপনি এতেই পেয়ে যাবেন সেই সমস্ত বিষয়াদি । 





সূর্যাসন: সূর্যাসনের মাধ্যমে প্রাকৃতিক সূর্যের আলো থেকে ভিটামিন D অর্জন করা সম্ভব। তবে, এটি সম্পূর্ণ অবহিত হওয়ার জন্য সকালে করতে হবে।‌






ত্বকের যত্ন: ত্বকের ভালোভাবে যত্ন নেওয়া, সাবান এবং ক্রীম ব্যবহার করা আর এতে ত্বক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে।সপ্তাহে অন্তত একদিন এক্সফোলিয়েট করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।এতে মৃত কোষ দূর হয় এবং ত্বক সতেজ দেখায়। এর ফলে বয়সের ছাপ হ্রাস পায়





প্রতিদিন ব্যায়াম: নিয়মিত ব্যায়াম করা, যেন এটি সক্রিয় জীবনযাত্রার একটি অংশ হয়, ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।





বারটাসেল ব্যবহার করুন: বারটাসেল ত্বকের মৃদুতা এবং শোকানোর জন্য উপযুক্ত একটি বিশেষ সাবান হতে পারে।





স্ক্রাবিং করবেন না: ত্বকের উপর অতিরিক্ত স্ক্রাবিং করবেন না, কারণ এটি ত্বকের মোজায় এবং বার্ধক্যের ছাপ পড়তে পারে ।






চিনি কম খাওয়া : চিনি খাওয়া কমিয়ে দিন । ফলাফল ‌পাবেন ।আপনারা জানেন চিনি উপকারী হলেও ক্ষতিকর বটে । 




আদা: মাঝারি একটা আদা থেঁতলিয়ে নিন । এরপর তার সাথে মোটা চিনি ও সামান্য অলিভ অয়েল ভালোভাবে মিশ্রিত করুন এবং ত্বকে ব্যবহার করুন । ২-৩ মিনিট ম্যাসাজ করুন । ১০ অপেক্ষা করার পর ধুয়ে ফেলুন।




হলুদ: চেহারায় বয়সের ছাপ দূর করতে হলুদ একটা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। আপনি তা করবেন এটা একটু সহজ বলা চলে । আদা চামচ হলুদের গুঁড়া নিন । ১ চা চামচ মধু ও তার সাথে ১ ফোঁটা লেমন এসেনশিয়াল অয়েল নিন । তারপর ভালভাবে মিশ্রিত করুন। ১০ মিনিট যাবৎ ম্যাসাজ করার পর শুকানোর জন্য অপেক্ষা করুন । তারপর শুকিয়ে যাওয়ার পর ধুয়ে নিন ।






তুলসী : ঔষধি গাছ হিসেবে পরিচিত এই তুলসী । কতটা উপকারী আমরা সবাই জানি । এই তুলসী বয়সের ছাপ দূর করতে যথেষ্ট কার্যকর। তুলসী পাতা সংগ্রহ করে গরম পানিতে ভিজিয়ে নিন । আবার অনেকক্ষণ রাইখেন না । তারপর পেস্টের মত করে নিন , অবশ্যই দাঁত ব্রাশ করা পেস্ট নয় । তারপর এর সাথে মধু ও বেসন মিশিয়ে নিন । তারপর ব্যবহার করুন । শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন তারপর ধুয়ে নিন। 





কোয়ালিটি নিয়ে ভ্রান্ত হবেন না: কোয়ালিটি প্রসূত করতে সাহায্য করতে পারে, তবে এটি যাচাই করে দেখে নিন । 





নিজের জন্য যত্ন নিন: বৃষ্টি, ঠান্ডা বা শীতকালে ত্বক সুরক্ষিত থাকতে সাহায্য করতে হয়। উচ্চ SPF সূরক্ষা ক্রিম এবং ভালো ষ্টকিং ব্যবহার করুন।





সবশেষে বলব প্রয়োজনে আপনি ডাক্তারের পরামর্শ নিন। এটাতো ঘরোয়া উপায়। তবে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া ভালো । 






একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম