হৃদপিণ্ড একটি পাম্পের মত কাজ করে । হৃদপিন্ডের সংকোচন এবং প্রসারণ দিয়ে এ কাজ সম্পন্ন হয় । হৃদপিন্ডের অবিরাম সংকোচন এবং প্রসারণ এর মাধ্যমে সারা দেহে রক্ত সংবহন পদ্ধতি অব্যাহত থাকে । হৃদপিন্ডের সংকোচনকে বলা হয় সিস্টোল এবং প্রসারণকে বলা হয় ডায়াস্টোল বলে । হৃদপিণ্ডের একবার সিস্টোল - ডায়াস্টোলকে একত্রে হৃৎস্পন্দন বলে ।
অলিন্দ দুটি প্রসারিত হলে শরীরের বিভিন্ন অংশ থেকে রক্ত হৃদপিণ্ডে প্রবেশ করে উর্ধ্ব মহাশিরার ভেতর দিয়ে কার্বন-ডাই-অক্সাইডযুক্ত রক্ত ডান অলিন্দে প্রবেশ করে । ফুসফুসীয় পালমোনারি শিরার ভেতর দিয়ে অক্সিজেন যুক্ত রক্ত বাম অলিন্দে প্রবেশ করে ।
অলিন্দ দুটির সংকোচন হলে নিলয় দুটির পেশি প্রসারিত হয়। তখন ডান অলিন্দ নিলয়ের ছিদ্রপথের ট্রাইকাসপিড ভালভ খুলে যায় এবং ডান অলিন্দ থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড যুক্ত রক্ত ডান নিলয়ে প্রবেশ করে ঠিক । ঠিক এই সময়ে অলিন্দ এবং বাম নিলয়ের বাইকাসপিড ভালভ খুলে যায় । তখন বাম অলিন্দ থেকে অক্সিজেন যুক্ত রক্ত বাম নিলয়ে প্রবেশ করে । এর পরপরই ছিদ্রগুলো কপাটিকা দিয়ে বন্ধ হয়ে যায় । এর ফলে নিলয় থেকে রক্ত আর অলিন্দে প্রবেশ করতে পারে না।
যখন নিলয় দুটি সংকুচিত হয়, তখন ডান নিলয় থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড যুক্ত রক্ত ফুসফুসীয় ধমনীর মাধ্যমে ফুসফুসে প্রবেশ করে । এখানে রক্ত পরিশোধিত হয় । ঠিক একই সময়ে বাম নিলয় থেকে অক্সিজেন যুক্ত রক্ত মহাধমনির মাধ্যমে সারাদেহে পরিবাহিত হয় এবং উভয় ধমনীর অর্ধচন্দ্রাকৃতির কপাটিকা গুলো বন্ধ হয়ে যায় । ফলে রক্ত পুনরায় নিলয়ে ফিরে আসতে পারে না । এভাবে হৃদপিন্ডে পর্যায়ক্রমিক সংকোচন এবং প্রসারণের ফলে রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকে ।