আর্সেনিকের বিষ মৃত্যুর কারণ !

প্রকৃতিতে পাওয়া যে মৌলগুলো রয়েছে তার মধ্যে আর্সেনিক অন্যতম ।‌ মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর এক বিষ । নেই কোন স্বাদ, রং এমনকি কোন গন্ধ ।‌ এক কথায় Silent killer. রোগটি হচ্ছে আর্সেনিক বাহিত । 



Arsenic


                                      






 এটি মুখ্যতঃ পানিতে ও মাটির সঙ্গে সংযুক্ত থাকে। আর্সেনিক পানিতে পাওয়া যায় এবং প্রাকৃতিক জমিতে আর্সেনিক থাকতে পারে। এটি মানব স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক একটি উপাদান হতে পারে।


মানবদেহে আর্সেনিক প্রবেশ করলে এর বিষক্রিয়া বিভিন্ন প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে ঘটে। এর মধ্যে সবচেয়ে প্রধান প্রতিক্রিয়াগুলি হলো মিথিলার্সেনিক অক্সাইড (MMA) এবং ডাইমিথিলার্সেনিক অক্সাইড (DMA) গঠনে পরিণত হওয়া। এদের মধ্যে DMA মানবদেহ থেকে আরও তীব্র বিষ হিসেবে কাজ করতে পারে।




এখন কথা হচ্ছে আর্সেনিক কিভাবে দেহে প্রবেশ করে ? 




প্রতি লিটার পানিতে ০.০৫ মিলিগ্রামের বেশি আর্সেনিক পেয়ে থাকলে সেটা হবে মানবদেহের জন্য অবশ্যই ক্ষতিকর।




মূলত তিনভাবে আর্সেনিক দেহে প্রবেশ করে 




১.বাতাসের মাধ্যমে শ্বাসনালীর সাহায্যে ভিতরে 




২.পানি ও খাদ্য দ্রব্যের সাহায্যে খাদ্যনালীর ভিতর দিয়ে






৩.আর একটি হচ্ছে ত্বকের মাধ্যমে শোষিত হয়ে দেহে প্রবেশ করে ।‌ 




লক্ষণ কি ? 






আর্সেনিকের মানবদেহে প্রবেশ করার পর লোকেরা বিভিন্ন লক্ষণ অনুভব করতে পারেন। আবহাওয়াগত এই লক্ষণগুলো অনেক বৈচিত্র্যপূর্ণ হতে পারে এবং প্রতিটি ব্যক্তি একই সমস্যার সমাধানে একইভাবে প্রতিক্রিয়া দেয় না। কিছু মামলায় লক্ষণ সাধারণত আর্সেনিক দ্বারা প্রভাবিত স্থানের পরিমাণ এবং সময়কালের উপর নির্ভর করে। তবে, কিছু সাধারণ লক্ষণগুলো নিম্নরূপে সংক্ষেপে উল্লেখ করা হলো:






প্রথম পর্যায়ের লক্ষণ:




• রোগীর গায়ে (যেমন বুকে, পিঠে, পেটে) কালো দাগ দেখা মিলবে। চামড়ার রং কালো ‌বর্ণ ধারণ বা ছোট ছোট কালো দাগের দেখা পাওয়া ।


• হাত ও পায়ের তালু শক্ত খসখসে হয়ে যায় ও ছোট ছোট শক্ত গুটি দেখা দিতে পারে। পরে কালো কালো দাগ হয়।


• বমি বমি ভাব এমনকি বমি হওয়া ; পাতলা পায়খানাও কম যায় না ।


• খাদ্যে অরুচি, রক্ত আমাশয়, মুখে ঘাও‌ দেখা যেতে পারে‌।






দ্বিতীয় পর্যায়ের লক্ষণসমূহ :




• হাত-পায়ের তালু ফেটে যাওয়া ও শক্ত গুটির দেখা দেবে‌।


• হাত-পা ফুলে ওঠবে‌ ।




তৃতীয় পর্যায়ের লক্ষণসমূহ:এ লক্ষণ গুলো খুবই মারাত্মক




• কিডনি, লিভার ও ফুসফুস বড় হওয়া ও একপর্যায়ে টিউমার হওয়া ।


• হাত ও পায়ে ঘা হওয়া, সেই সাথে পচন ধরা ।


• চামড়া, মূত্রথলি, ফুসফুসে ক্যান্সার ।


• কিডনি ও লিভার নষ্ট হয়ে যায়।


• জন্ডিস দেখা যাওয়া 


• পেটে ও মাথা ব্যথা 


• রক্ত বমি হওয়া ।




কারণ কি ? 






আর্সেনিক দ্বারা প্রভাবিত হলে মানুষের বিভিন্ন কারণে লক্ষণ উৎপন্ন হয়ে যায়। কারণগুলির মধ্যে বিশেষতঃ নিম্নলিখিত উল্লেখযোগ্য:




ত্বকে আর্সেনিকের প্রভাব: আর্সেনিক ত্বকের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, যেমন ত্বকের সংক্ষারণ, অস্থানিক রঙ পরিবর্তন এবং পুরোপুরি পাতলা হয়ে যাওয়া।




নিউরোলজিক প্রভাব: আর্সেনিক মানবদেহে প্রবেশ করে নিউরোলজিক সিস্টেমের ক্ষতি সৃষ্টি করতে পারে। এটি মানসিক ব্যাধিগুলি, যেমন ডিপ্রেশন, শ্রম, বিপদজনক মনস্থিতি, মেমোরি সমস্যা, সংজ্ঞায়িত সমস্যা পরিচালনা করতে পারে।




ক্যান্সারের জন্য ঝুঁকি: আর্সেনিক দ্বারা প্রভাবিত অধিক পরিমাণে আর্সেনিক দেহে উপস্থিত থাকলে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়তে পারে।






মৃত্যু ঝুঁকি আছে কি ? 






হ্যাঁ, আর্সেনিক মানবদেহে প্রবেশ করলে মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি হতে পারে। আর্সেনিক মানব স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক একটি পদার্থ হতে পারে এবং অধিক পরিমাণে আর্সেনিক প্রদান করলে গুরুতর সমস্যার জন্য মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ে।




আর্সেনিক দ্বারা প্রভাবিত হলে প্রাথমিকভাবে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে, যেমন শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসের ক্যান্সার, গর্ভাবস্থায় ক্যান্সার ইত্যাদি। এর পাশাপাশি আর্সেনিক মানব শরীরে ক্রিয়াশীল হয়ে যায়, যা অবস্থান ও পরিমাণের উপর নির্ভর করে মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়াতে পারে।






করণীয় কি ? 






আর্সেনিক বিষক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কিছু করণীয় নিম্নরূপে উল্লেখ করা হলো:




পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি পর্যবেক্ষণ করুন: যদি আপনি আর্সেনিক জমিতে ব্যবহার করে থাকেন বা আর্সেনিক প্রদান করা পানি ব্যবহার করেন, তবে নিজের বা স্থানীয় পরিষ্কার পানির উপস্থিতি পরীক্ষা করতে হবে। আর্সেনিক পরীক্ষার জন্য পানি নিজে পরীক্ষা করতে পারেন না, তবে অফিশিয়াল পানি পরীক্ষা ল্যাবে নমুনা জমানোর জন্য নিয়োগ করতে পারেন।




পরিষ্কারতা বজায় রাখুন: সঠিক পরিষ্কারতা বজায় রাখা আর্সেনিক দ্বারা প্রভৃতি বিষক্রিয়া সম্ভাবনাকে কমিয়ে আনতে সাহায্য করতে পারে। পানিতে সঠিকভাবে ফিল্টার ব্যবহার করুন, পানিতে স্থানীয় পানি সংস্কার ব্যবহার করুন এবং খাদ্যের পরিষ্কারতা নিশ্চিত করতে অবশ্যই নিয়ম অনুযায়ী চলুন।












চিকিৎসা কি ? 






আর্সেনিকের বিষক্রিয়ার ক্ষেত্রে চিকিৎসা নিম্নলিখিত দিকে নিয়ে যেতে পারে:




আপনি যদি আর্সেনিক প্রভাবিত বা আর্সেনিকের মধ্যে প্রভাবিত হন, তবে সবচেয়ে প্রাথমিক কাজ হচ্ছে একটি চিকিৎসা যা সাধারণত চেকআপ পরীক্ষা করানো হয় ।




যদি আপনি লক্ষণ অনুভব করছেন, যেমন ত্বকের সমস্যা বা নিউরোলজিক সমস্যা, তবে আপনার চিকিৎসক একটি সম্পূর্ণ চিকিৎসা মার্গানুসারে বিশেষজ্ঞ পরামর্শ দেবেন। 




আপনার চিকিৎসক পরামর্শ দিয়ে পরীক্ষা করবেন আর্সেনিক স্তর পরিমাপ করতে। এটি অন্যদিকে চিকিৎসকের সহায়তায় আর্সেনিক বিষক্রিয়া পরিমাপ করবেন।








প্রতিরোধ 






আর্সেনিকের বিষক্রিয়া থেকে প্রতিরোধ করতে নিম্নলিখিত কয়েকটি পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত:




পরিষ্কারতা ও পানির উৎসের পর্যবেক্ষণ করুন: আপনার ব্যবহৃত পানির উৎস বা পানির পাইপ পরিষ্কার এবং নিরাপদ কিন্তু সঠিক হলেই ব্যবহার করুন। নিজেকে এবং পরিবারকে আর্সেনিক যুক্ত পানি থেকে সুরক্ষিত রাখতে হবে।




পানি শোধন করুন: পানির শোধন বিশেষজ্ঞ ফিল্টার ব্যবহার করে করা উচিত, যা আর্সেনিককে পরিষ্কার করতে সহায়তা করে। সাধারণতঃ পানি শোধনের জন্য নলেজ পুরোপুরি বা রিভার্স ওসমোসিস ফিল্টার ব্যবহার করা হয়।





স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রামীণ এলাকায় থাকলে নিশ্চিত করুন: গ্রামীণ এলাকায় অর্থনৈতিক কারণে আর্সেনিক মুক্ত খাদ্যের ব্যবহার হতে পারে। তাই খাদ্যের পরিষ্কারতা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ নিয়মগুলো নিশ্চিত করতে হবে।‌

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম