মানুষের শরীরে যত সমস্যা রয়েছে তার মধ্যে প্রস্রাব আটকে যাওয়া একটি । যখন প্রস্রাব আটকে যায় তখন দুনিয়ার কোন কিছুই খেয়াল থাকে না। আপনার কি কখনো এরকম হয়েছে ? আসলে এটি বেশ যন্ত্রণাদায়ক। এরুপ সমস্যা কেন হয়, এবং তা থেকে পরিত্রাণের উপায় আজকের আলোচনার বিষয়বস্তু।
কাদের হয় : বয়ষ্ক বা কমবয়ষ্ক উভয়েরই হতে পারে । তবে ২ বছর বয়সে হয় জন্মগত ত্রুটির কারণে । আবার আর একটু বয়স হলে হয় প্রস্রাবের রাস্তায় পাথর হলে কিংবা কোষ্ঠকাঠিন্য হলে । এছাড়াও আরও কিছু কারণ রয়েছে। তবে বয়ষ্ক লোকদের বেশি হতে দেখা যায় । তো কেন হয় তা বিস্তারিত জানিয়ে দিচ্ছি ।
প্রস্রাব আটকে যায় কেন ?
প্রস্রাব আটকে যাওয়ার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। কিছু সাধারণ কারণের মধ্যে রয়েছে:
প্রস্রাবের পথে বাঁধা: প্রস্টেট গ্রন্থি বড় হয়ে গেলে, কিডনিতে পাথর থাকলে, বা মূত্রনালীতে কোনো বাধা থাকলে প্রস্রাব আটকে যেতে পারে।
স্নায়ুর সমস্যা: স্নায়ুর সমস্যার কারণে মূত্রথলির সংকোচন এবং প্রস্রাব ছাড়ার প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে। এটি ডায়াবেটিস, মস্তিষ্কের আঘাত, মেরুদণ্ডের আঘাতের কারণে হতে পারে।
মূত্রনালীর সংক্রমণ (ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন - UTI): UTI-এর কারণে মূত্রনালীতে ব্যথা বা জ্বালাপোড়া হতে পারে এবং প্রস্রাব আটকে যেতে পারে।
মূত্রথলির দুর্বলতা: বয়সের সঙ্গে সঙ্গে বা অন্য কোনো কারণে মূত্রথলির পেশী দুর্বল হয়ে গেলে প্রস্রাব আটকে যেতে পারে।
ঔষধের প্রভাব: কিছু ঔষধ, যেমন এন্টিহিস্টামিন বা ডিকনজেস্টান্ট, মূত্রথলির পেশীকে প্রভাবিত করতে পারে, যার ফলে প্রস্রাব আটকে যেতে পারে।
প্রস্রাবের সময় বিলম্ব: যদি কেউ প্রস্রাব করার সময় বেশি দেরি করেন বা ইচ্ছাকৃতভাবে প্রস্রাব আটকান, তাহলে তা মূত্রথলিতে চাপ তৈরি করতে পারে এবং প্রস্রাব আটকে যেতে পারে।
প্রস্রাব আটকে যাওয়া গুরুতর একটি সমস্যা হতে পারে। যদি এমন সমস্যা হয়, তাহলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
প্রস্রাব আটকে গেলে করণীয় কি ?
করণীয় : যে কাজ করলে আপনি মুক্তি পেতে পারেন।
প্রস্রাব আটকে গেলে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি, কারণ এটি একটি গুরুতর সমস্যা হতে পারে। করণীয় বিষয়গুলো হলো:
চিকিৎসকের পরামর্শ নিন: প্রস্রাব আটকে গেলে প্রথমেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। চিকিৎসক প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করে সমস্যার মূল কারণ নির্ধারণ করবেন এবং সঠিক চিকিৎসা দেবেন।
ক্যাথেটার ব্যবহার: যদি প্রস্রাব একেবারেই আটকে যায়, তাহলে চিকিৎসক ক্যাথেটার নামক একটি নল ব্যবহার করতে পারেন, যা মূত্রথলির ভেতর প্রবেশ করিয়ে প্রস্রাব বের করে দেয়।
প্রয়োজনে ওষুধ সেবন: যদি প্রস্রাব আটকে যাওয়ার কারণ হিসেবে প্রস্টেটের সমস্যা বা মূত্রথলির পেশীর দুর্বলতা থাকে, তাহলে চিকিৎসক ওষুধ দিতে পারেন।
পানির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ: প্রচুর পানি পান করা গুরুত্বপূর্ণ, তবে প্রস্রাব আটকে যাওয়ার সময় অতিরিক্ত পানি না খাওয়াই ভালো, কারণ এটি মূত্রথলিতে আরও চাপ তৈরি করতে পারে।
স্নায়ুর সমস্যার চিকিৎসা: যদি স্নায়ুর সমস্যার কারণে প্রস্রাব আটকে যায়, তাহলে সেই সমস্যার চিকিৎসা করা জরুরি। ফিজিওথেরাপি বা অন্যান্য স্নায়ুর চিকিৎসা পদ্ধতিও ব্যবহার করা যেতে পারে।
পরবর্তী সময়ে সমস্যা এড়ানো: সমস্যার পুনরাবৃত্তি এড়াতে প্রস্রাব আটকে রাখার বদ অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে এবং নিয়মিত মূত্রত্যাগ করতে হবে।
যদি এই ধরনের সমস্যা হয়, তবে দেরি না করে অবিলম্বে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া সবচেয়ে ভালো পদক্ষেপ।