অ্যানথ্রাক্স মৃত্যু ঘটায় ? ভয়ের ব্যাপার ?

 এ পৃথিবীতে আল্লাহ তায়ালা অনেক রোগ - বালাই দিয়েছেন । দিয়েছেন তার প্রতিষেধকও । এমন অনেক রোগ আছে তা অন্য প্রাণী হতে ছড়ায়। প্রাণী হতে প্রাণী তার থেকে মানুষ। এমনি এক ধরনের রোগ আছে আর সেটা হল অ্যানথ্রাক্স । নাম শুনে লেখাটা পড়া ছেড়ে দিয়েন না । এটা প্রাথমিকভাবে প্রাণীর মধ্যে দেখা যায় । এরপর ছড়ায় মানুষের মাঝে । এটা গবাদি পশুর সংক্রামক রোগ বলা চলে।


                                     



Anthrax




এখন বলতে পারেন গবাদি পশু কিভাবে আক্রান্ত হয় ?


মূলত জীবাণু দ্বারা সংক্রামিত হয় । গবাদি পশু ঘাস খায় , এ খাদ্য খেয়ে অর্থাৎ বিশেষ করে বর্ষাকালে নদী-নালার পানি ও জলাবদ্ধ জায়গার ঘাস খেয়ে গবাদিপশু অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে । ব্যাসিলাস অ্যান্থ্রাসিস (Bacillus anthrasis) নামক ব্যাকটেরিয়া এর জন্য দায়ী।


                                                







মূলত গরু এ রোগে আক্রান্ত হয় অনেক বেশি । তবে ছাগল, ভেড়া, ঘোড়া, মহিষ, জেব্রা, জিরাফ, হরিণ, শূকর, হাতি এবং বানরও এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে । তবে আর একটি কথা এই যে এটি প্রাণী থেকে মানুষে ছড়ায় বলে একে জ্যুনোটিক ডিজিজও (zoonotic disease) বলা হয়ে থাকে । এইজন্য ভয়টা অনেকটাই বেশি।


লক্ষণ কি কি হতে পারে ?


এনথ্রাক্স রোগের লক্ষণগুলো প্রাণীদের প্রকার ও সাধারণত আক্রান্ত অংশের উপর ভিত্তি করে পরিবর্তিত হতে পারে।  




১.শ্বাসকষ্ট ও জ্বরসহ পুষ্টিমান অবস্থা (Cutaneous Anthrax): যেখানে মানুষ বা প্রাণীর চামড়ায় এনথ্রাক্স ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করে। এই অবস্থায় মানুষের চামড়া উত্তেজিত হয়ে স্থানীয় পাপড় প্রদর্শন করে। পাপড় উচ্ছৃঙ্খল হতে পারে এবং স্রাব প্রকাশ করতে পারে। পাপড় উল্বণ হয়ে গেলে একটি গাঁথ বা ব্যাঁত উদ্ভব হতে পারে যা পানিতে পরিণত হয়ে ফুলে উঠতে পারে। আক্রান্ত অংশ আকারটি বৃদ্ধি পাবে এবং গাঁথের চারপাশে ত্বক অবস্থান করে যা বেশি বেশি মাত্রায় মৃত সাদাকালো রঙের অঙ্গূর ধারণ করতে পারে। এই অবস্থায় জ্বর, শ্বাসকষ্ট দেখা দেয় ।




২.আক্রান্ত ব্যক্তির দেহে জ্বর দেখা যাবে;

৩. চামড়ায় প্রথমে লালচে দাগ এবং আক্রান্ত স্থান চুলকাবে;

৪.. পরবর্তীতে আক্রান্ত স্থানে প্রায় দেড় দুই ইঞ্চি পরিমাণে ফোসকা উঠবে, ফোসকার মধ্যখানে পচনের মত কালচে হবে;

৫. ফোসকার স্থানে পরে ব্যথামুক্ত ঘা দেখা দেবে ।


এতে মৃত্যু কি অবধারিত ?


হ্যাঁ, যদি এনথ্রাক্স রোগ সম্পূর্ণ উন্মুক্ত না হয় এবং প্রতিষেধক চিকিৎসা না প্রদান করা হয়, তবে এনথ্রাক্স রোগ মানব ও প্রাণিদের মৃত্যুও সংঘটিত হতে পারে।




আদ্যতম রক্তসংক্রমন (Gastrointestinal) এনথ্রাক্স হলে মানুষের মৃত্যুর ঝুঁকি অনেক বেশি হয়। এই অবস্থায় পেটে ব্যথা, বিক্ষিপ্ত পাকস্থলী, ক্ষুধামন্দা, বমি ।


শ্বাসকষ্ট (Pulmonary) এনথ্রাক্স হলে এটি অত্যন্ত মারাত্মক হতে পারে।


এ অবস্থায় করণীয় কি ?


যদি আপনি এনথ্রাক্স রোগের সন্দেহ করেন বা অনুমান করেন যে আপনি এনথ্রাক্সে আক্রান্ত হতে পারেন, তবে আপনাকে দ্রুত চিকিৎসার মাধ্যমে কর্তব্যবহুল হওয়া উচিত। নিম্নলিখিত করণীয়গুলো অনুসরণ করা উচিত:


তাৎক্ষণিক চিকিৎসা: সম্ভবত এনথ্রাক্স রোগের সন্দেহ থাকলে আপনাকে তাৎক্ষণিকভাবে ডাক্তারের সাহায্য নিতে হবে। মেডিকেল পেশাদারদের সংস্পর্শে যাওয়া একটি ভালো পদক্ষেপ হবে।


প্রতিষেধক চিকিৎসা: ডাক্তার আপনাকে প্রতিষেধক চিকিৎসা প্রদান করবেন। এটি অন্তর্ভুক্ত করতে পারে ব্যাকটেরিয়া বা তার সাধারণতঃ ব্যবহৃত ঔষধ জনিত এন্টি বায়োটিক সেট, প্রতিষেধক কোর্স ।‌


কোন কোন সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে ?


এনথ্রাক্স রোগের জন্য কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত যা হলে আপনি প্রাকৃতিক ভাবে সুরক্ষা নিতে পারেন। নিম্নলিখিত সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত: 




১. সন্দেহজনক পশুর মাংস থেকে দূরে থাকুন: এনথ্রাক্স ব্যাকটেরিয়া সাধারণত মৃত পশুর মাংস থেকে উৎপন্ন হয়ে থাকে। সন্দেহজনক পশুর মাংস থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন।


২.মৃত পশুর শবদেহের সংস্পর্শ থেকে বিরত থাকুন: এনথ্রাক্স সংক্রান্ত পশুর শবদেহের সংস্পর্শ থেকে বিরত থাকুন। আপনি স্থানীয় অথবা রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করে মৃত পশুর সংবাদ দিন।


৩. স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সতর্কতা পালন করুন: সাধারণ স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সতর্কতা পালন করুন, যেমন হাত ধুয়ে রাখুন, মাস্ক পরিধান করুন ইত্যাদি।‌

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম