আমরা প্রায়ই শুনে থাকি যে কোন ছেলে বা মেয়ে বিষ পান করে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছে । কারণ যাই হউক । আপনি কি কখনো পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মারাত্মক ঝগড়ায় লিপ্ত হয়েছেন ? কিংবা প্রেমে ছেকা খেয়েছেন ? অথবা আপনাকে কেউ অপমান করল ? অপমান সহ্য করতে না পেরে রাগের বশে বিষ পান করে ফেললেন ? কি হল ? লাভের লাভ কিছুই হল না । দিনশেষে ক্ষতিটা আপনারই হলো । ইসলাম বলে, আত্মহত্যা করা গর্হিত কাজ । আর এর জন্য পরকালে আপনাকে শাস্তি ভোগ করতে হবে । "রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন"। ওহ্ আমি তো কেডি পাঠকের (অভিনেতা রণিত রায়) উক্তি বলে ফেললাম।
রাগের বশে পান করে হতাশ হচ্ছেন, হায় হায় কি করলাম ? নিজের জীবন বাঁচানোর জন্য কতই না চেষ্টা করে থাকেন। পারিবারিক কলহের জেরে এমন কাজ অনেকে করে থাকেন । কিন্তু কোন সমাধান কি হল ? না পারবেন প্রেমিকাকে বিয়ে করতে ? আর অপমানের বিষয়টা অন্য কিছু । অপমান মানুষের মনে আঘাত দেয় এটা সত্যি ? তাই বলে কি আপনি আপনার মহামূল্যবান সম্পদ এই জীবনটাকে ছেলেখেলা বানাবেন ? কেন নষ্ট করতে চাচ্ছেন এই জীবনটাকে ? আরে এখন কিছু হয় নি ভবিষ্যতে আপনার জন্য ভালো কিছু হতেও পারে ।
বিষপান তো আর যুদ্ধ ক্ষেত্র নয় যে আমাকে শত্রুপক্ষকে হারিয়ে বিজয় ছিনিয়ে আনতেই হবে । তাহলে কেন ভাই ? কেন ? একটু কি কষ্ট হয় না যে পিতা মাতা আপনাকে কষ্ট করে এ পর্যন্ত এনেছেন বিষ পানে মরার জন্য ? তারা আপনার কাছ থেকে ভালো একটা জীবন চায় । সুন্দর ভবিষ্যৎ চায় । কেন তাদের হাসি মুখটাকে কান্নায় বা কষ্টে জর্জরিত করবেন ?
যাই হউক অনেক কথাই বলে ফেললাম , এখন বলি বিষপান রোগীদের ক্ষেত্রে করণীয় কি ? বিষপান করা রোগীর চিকিৎসা একটি গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি বিষয়। বিষপান সাধারণত কার্যকর প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। নিম্নলিখিত কিছু চিকিৎসা পদ্ধতি রোগীর জন্য ব্যবহার করা হয় বিষপান রোগীর চিকিৎসার জন্য:
১.বমি করানোর চেষ্টা করা
বিষ খেলে যদি লোকটির জ্ঞান না হারিয়ে থাকে তবে বমি করানোর চেষ্টা করতে হবে কিন্তু যদি জ্ঞান না থাকে তাহলে তা করা যাবে না । বমি না আসলে গলায় আঙ্গুল ঢুকিয়ে বমি করাতে হবে । রোগী অক্ষম হলে প্রয়োজনে অন্য কেউ চেষ্টা করবে। অথবা যে পদ্ধতিতে সে বমি করবে সে পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।
লবণ মেশানো গরম পানি, ডিমের সাদা অংশ কিংবা কাচা সরষের তেল খাইয়েও বমি করানো যেতে পারে ।
২.শ্বাস প্রশ্বাস ও হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ থাকলে কৃত্রিম পদ্ধতিতে তা চালু করার ব্যবস্থা করতে হবে ।
৩। রোগী ঝিমিয়ে পড়লে তাকে জাগিয়ে রাখতে হবে । ঝিমাতে দেয়া যাবে না ।
৪.বিষের প্রকার এবং পরিমাণ নির্ধারণ: সঠিক চিকিৎসার জন্য প্রথমে বিষের প্রকার এবং পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়। এটি পরিবেশ,এবং বিষের ধরণের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে।
৫.তৎক্ষণাৎ ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।
প্রাথমিক চিকিৎসা: বিষপ্রভাবিত ব্যক্তিকে অত্যাবশ্যক প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। আর এতে ডাক্তার যা করতে বলবেন তাই করতে হবে । ডাক্তার রোগীর অবস্থা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন।