ব্যথা কথাটির সাথে আমরা সকলেই পরিচিত। তা যদি হয় পিঠ ব্যথা তা ও কিন্তু আমরা সকলেই জানি । আর এও জানি এটা খুব যন্রণাদায়ক। পিঠ ব্যথা হলো পিঠের অত্যাধিক ব্যথা বা তিক্ত অনুভব। এটি সাধারণত পিঠের আঘাত, পিঠের মাংশপেশীতে সমস্যা, স্পাসম বা স্পস্টতা,লিগামেন্ট, মেরুদণ্ড, কশেরুকার সমস্যা , পিঠের পেশিতে চাপ পড়া এবং পিঠের কাঠামোগত সমস্যা। পিঠে ভারী কাজ সম্পাদন এবং অন্যান্য কারণে ঘটতে পারে। পিঠ ব্যথার কারণে অনেকে সাধারণত দৈহিক কর্মক্ষমতা হ্রাস অনুভব করে ।
কারণ জানার আগে লক্ষণ কি কি তা জেনে নেই ।
লক্ষণ: ব্যথা বা তিক্ত অনুভব পিঠের ক্ষেত্রে
স্পাসম বা স্পস্টতা
পিঠের আঘাতের জন্যে পিঠে হতাশা বা সহ্য না করা
পিঠের মাংশপেশীর স্থানে স্পষ্ট ব্যথা অনুভব করা
এবার আসুন জেনে নেই কারণ কি কি ?
১. মাংশপেশীর সমস্যা: সমস্যাদীর্ঘ সময় ধরে বসে থাকা, দাঁড়িয়ে থাকা কিংবা একই অবস্থানে থাকার কারণে মাংসপেশিতে টান পড়ে, মাংসপেশি সঙ্কুচিত হয়ে ব্যথার উদ্ভব ঘটে ।
২. আঘাত: পিঠে আঘাত পাওয়া হলে ব্যথা হতে পারে। আঘাত হতে পারে একটি অপদস্থ বস্তুর দ্বারা, পিঠের মধ্যে কোন সম্পৃক্ত অঙ্গের অস্থানিক চলাচলের ফলে অথবা একটি দুর্ঘটনা বা আঘাতের পরিণতির ফলেও হতে পারে।
৩.অসঠিক ওজন নির্ধারণ: যখন একটি ব্যাকপ্যাক কাজে ব্যবহৃত হয় বা ভারী বস্তু পিঠে নিলে, তখন পিঠ ব্যথা হতে পারে। অসঠিক ওজন নির্ধারণ একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হতে পারে কারণ এরকম কাজগুলো পিঠের চাপ বা সংকীর্ণতা বাড়িয়ে দেয় ।
৪.বাত : স্পাইনাল অস্টিওআর্থারাইটিস পিঠে ব্যথার একটি অন্য একটি কারণ। এতে আপনার পিঠের নিচে থাকা জয়েন্টগুলোর কারটিলেজের অবনতির পর্যায়ে চলে যায় আর এতেই মেরুদণ্ড চেপে আসতে পারে বা সংকীর্ণ হতে পারে, যা ব্যথার কারণ।
৫. অস্টিওপোরোসিস: হাড়ের ঘনত্ব হ্রাস হওয়া এবং হাড় পাতলা হয়ে যাওয়াকে অস্টিওপোরোসিস বলা হয়। এতে গুরুতর ব্যথার জন্ম দেয় ।
চিকিৎসা কি ?
পিঠ ব্যথার চিকিৎসা উপযুক্ত সময়ে করা উচিত, যাতে ব্যথার কারণ সনাক্ত করা এবং সেই কারণগুলো নির্মূল করা যায়। চিকিৎসার প্রধান লক্ষ্য হলো পিঠ ব্যথা থেকে ব্যক্তিকে মুক্তি দেয়া । চিকিৎসার পদ্ধতিগুলো নিম্নলিখিত হতে পারে:
১. বিশ্রাম এবং সংযমিত কর্মক্ষমতা: যখন পিঠ ব্যথা অনুভব করা হয়, তখন সম্পূর্ণ বিশ্রাম নেওয়া উচিত। এছাড়াও কিছু সংযমিত কর্মক্ষমতা প্রয়োজন, যেমন ভারী বস্তুগুলি না উঠানো, পিঠের সাহায্যে করা কাজ থেকে দূরে থাকা, ওজন নির্ধারণের সঠিক প্রয়োগ ইত্যাদি।
২.শারীরিক চিকিৎসা: ব্যথার কারণ হলো মাংশপেশীর সমস্যা, তাহলে শারীরিক চিকিৎসা যেমন ফিজিওথেরাপি, মাসাজ, শারীরিক ব্যায়াম, পটলি ব্যবহার ইত্যাদির ব্যবহার করতে পারেন
আর কি কি সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত ?
পিঠ ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। নিম্নলিখিত কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা যেতে পারে:
১.শারীরিক কর্মক্ষমতা সীমাবদ্ধ রাখুন: ভারী বস্তুগুলি না উঠানো এবং পিঠের জন্যে ক্ষতিকারক কর্মক্ষমতা সীমাবদ্ধ রাখুন। যদি আপনার কাজে ভারী বস্তু উঠানো লাগে, তবে অন্যের সহায়তা নিন।
২.সঠিক আদর্শ ওজন নির্ধারণ করুন: আপনার ওজনকে নির্ধারণ করার সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন। ওজন নির্ধারণের সঠিক প্রয়োগ পিঠের চাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে।
৩.ঘুমানোর সময়: ঘুমানোর সময় কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখুন । যেমন- শক্ত তোশক বা জাজিমের ওপর ঘুমানো । পিঠ উপরের দিকে রেখে ঘুমাবেন না। চিৎ হয়ে ঘুমাবেন। যদি পাশ ফিরে ঘুমাতে চান, তাহলে সেই পাশে আপনাকে হাঁটু সামান্য বাঁকা রেখে ঘুমাতে হবে ।