মধু তরল একটি খাদ্য । প্রায় সবার কাছেই প্রিয় । এর স্বাদ,ঘ্রাণ মানুষের মন ছুঁয়ে দেয় । যে কোন দিন মধুর ধার কাছেও যায় নি , সে একবার খেলে আর ফেলে দিতে পারবে না । কি না আছে এই মধুতে ? শীতে উষ্ণতা বাড়ানো থেকে শুরু করে বহু রোগের প্রতিষেধকও পাওয়া যায়,এটা কিন্তু বৈজ্ঞানিক ভাবেও প্রমাণিত । আজকে এই মধুর উপকারিতা সম্পর্কে জানাব ।
মধুর উপাদান
মধুতে প্রায় ৪৫টি খাদ্য উপাদান থাকার কথা উল্লেখ করা হয় ।এখন দেখেন ফুলের পরাগের মধুতে পাওয়া যায় ২৫ থেকে ৩৭ শতাংশ গ্লুকোজ, ৩৪ থেকে ৪৩ শতাংশ ফ্রুক্টোজ, ০.৫ থেকে ৩.০ শতাংশ সুক্রোজ এবং ৫ থেকে ১২ শতাংশ মন্টোজ। এ ছাড়াও ২২ শতাংশ অ্যামাইনো অ্যাসিড, ২৮ শতাংশ খনিজ লবণ । এতে চর্বি ও প্রোটিন নেই । তাই চর্বি সংক্রান্ত বিষয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই । আবার ১০০ গ্রাম মধুতে ২৮৮ ক্যালরি বিদ্যমান ।
উপকারিতা: মধুর উপকারিতা অনেক । তবে নিচে কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করছি ।
১. পুষ্টিকর খাদ্যতত্ত্ব: মধু প্রাকৃতিক পুষ্টিকর মাধ্যমে কার্বোহাইড্রেট, মিনারেলস এবং ভিটামিনসমূহ সরবরাহ করে। এটি শরীরের শক্তির উৎপাদনে সাহায্য করে এবং শরীরের সঠিক কার্বোহাইড্রেট প্রয়োজনীয়তা পূরণ করে।
২. পাচনে সাহায্য: মধু সাধারণত এনজাইমের সঙ্গে আবিষ্কৃত হয়ে থাকে, যা পাচন প্রক্রিয়াকে সহায়তা করে। এটি স্থলীয় পাচনতত্ত্বের জন্য উপকারী হতে পারে এবং নিরামিষ প্রক্রিয়াকে সহায়তা করে।
৩.শরীরের প্রতিরোধক্ষমতা উন্নতি: মধুতে প্রকৃতিক এন্টিব্যাক্টেরিয়াল গুণাবলী থাকতে পারে, যা শরীরের প্রতিরোধক্ষমতা উন্নতি করে। মধু একটি প্রাকৃতিক আন্টিসেপ্টিক হিসেবে কাজ করতে পারে এবং ব্যাকটেরিয়া, সাংক্রামিক পদার্থ বা অন্যান্য ক্ষতিকর পদার্থ থেকে রক্ষা করতে পারে।
৪.গঠনশক্তির সংরক্ষণ: মধু প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হয়ে থাকা একটি মিশ্রণ, যা বিভিন্ন শক্তির উৎস হিসেবে কাজ করতে পারে। মধুতে সহজেই পাওয়া যায় শক্তির উৎস যেমন গ্লুকোজ, ফ্রাক্টোজ ইত্যাদি, যা দেহের প্রোটিন এবং মূল্যবান নিউট্রিন্ট গুলির জন্য গঠনশক্তির সংরক্ষণ প্রদান করে।
৫.আন্তিকোষের বৃদ্ধি: কিছু গবেষণার প্রতিফলিতে পাওয়া হয়েছে যে, মধু আন্তঃকোষের বৃদ্ধি করতে পারে এবং গ্লুকোজ মিশ্রিত তরল মধু যেমন মধু জল অস্তিত্ব রাখে তেমনি তাকে ব্যবহার করলে আন্তঃকোষ কার্যকর হয়ে উঠে।
৬.মধু মস্তিষ্কের কাজে উপকারী: মধু মস্তিষ্কের কাজ উন্নতি করতে পারে এবং মানসিক শান্তি এবং স্থিরতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করতে পারে। মধুতে উপস্থিত মিনারেলস এবং প্রকৃতিক পাকাগুলি মানসিক স্বাস্থ্য ও মনোবিজ্ঞানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
৭.গলাযুক্তির উন্নতি: মধু গলাযুক্তির উন্নতি করতে পারে এবং সাধারণত সর্দি, কাশি এবং গলা ব্যাথা মিটানোর জন্য উপকারী। তাপমাত্রা উচ্চ করে মধু গলাযুক্তির পরিমাণ বাড়াতে পারে এবং গলার মাখনের উৎপাদনও সহায়তা করে।
৮. ত্বকের কালচেভাব দূর: মধু ঠোঁটের ওপরের শুষ্ক ত্বক ও কালচে ভাব দূর করে ঠোঁটকে নরম ও গোলাপি করে তুলতে সহায়তা করে। রাতে ঘুমানোর আগে নিয়মিত ঠোঁটে মধু লাগান। ঠোঁট হয়ে উঠবে নজর কাড়া সুন্দর।
৯. ওজন কমাতে: মধু ওজন কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন সকালে ১ গ্লাস কুসুম গরম পানিতে ১ চামচ মধু মিশিয়ে পান করলে হজম শক্তি বাড়ে ও ফলে খাবারের ক্যালোরি দ্রুত ক্ষয় হয়। ফলাফল ওজন কমে যায় ।