অ্যাপেনডিসাইটিস ( Appendicitis) কি ?
আমার অনেক সময় অ্যাপেনডিসাইটিস রোগীর কথা শুনে থাকি । বলা হয়ে থাকে যে ছেলেটি বা মেয়েটির অ্যাপেনডিসাইটিস এর সমস্যা আছে । অথবা বাড়ির কেউ জানলে হয়তো তার এই সমস্যা এভাবে বলা হয় যে,'তোর তো অ্যাপেনডিক্স আছে' অথবা বলা হয় , এই সমস্যা নিয়ে পড়ে আছো চিকিৎসা করছ না কেন ?
আমার এক ফুপাতো বোনের ছোট বেলায় শুনেছিলাম যে তার অ্যাপেডিক্স এর ব্যথা আছে । এখন বুঝুন । সেই ছোট বেলায় শুনেছি । সেই বোন তখন ছোট ছিল । তখন কি এমন একটা প্রশ্ন দাড়ায় না যে অ্যাপেনডিক্স কি যে কোন বয়সে হতে পারে ? উত্তর হলো হতেই পারে । সাধারণত দেখা যায় ১০-৩০ বছরের মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে।
এখন কথা হচ্ছে তাহলে অ্যাপেনডিসাইটিস কি ? মানবদেহের যে বৃহদন্ত্র রয়েছে তা দেখতে নলের মত ফাঁপা। এই বৃহদন্ত্রের তিনটি অংশ আছে । যার একটি হল সিকাম। এই সিকামের সাথে যুক্ত থাকে অ্যাপেনডিক্স,দেখতে ছোট একটা আঙ্গুলের মত । যদি কোন কারনে এটা সংক্রমণ হলে তাকে অ্যাপেডিসাইটিস বলা হয় । তাহলে কথা হচ্ছে," অ্যাপেনডিসাইটিস এর লক্ষণ কি ? " যাই হউক,পরের প্রশ্নে আসি
বোঝার উপায় কি ?
আপনার অ্যাপেনডিসাটিস হয়েছে কিনা তা বুঝবেন কি করে ? প্রথমত নাভির চারদিক থেকে ব্যথা শুরু হবে এবং ব্যথা চলাকালীন কয়েট ঘন্টার মধ্যেই তলপেটের ডানে সরে যাবে ।
অ্যাপেনডিসাইটিস এর লক্ষণ কি ? নিচে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
লক্ষণ গুলো কি কি ?
১. বমি বমি ভাব, বমি হওয়া,
২. কোষ্ঠকাঠিন্য,
৩. ক্ষুধামন্দ্যা,
৪. পেট ফুলে যাওয়া,
৫. পেট ব্যথা ও
৬. জ্বর
কত প্রকার ?
অ্যানডিসাইটিস দুই প্রকার । বিস্তারিত বর্ণনা সহ নিচে আলোচনা করছি ।
১.তীব্র অ্যাপেন্ডিসাইটিস : এই অ্যাপেনডিসাইটিস হঠাৎ করেই শুরু হয় । শুধু তাই নয় তীব্রও হতে পারে ।
২.দীর্ঘস্থায়ী অ্যাপেন্ডিসাইটিস:এই অ্যানডিসাইটিস মাঝে মাঝে দেখা যায় । লক্ষণ সমূহ হালকা। তবে এটা ধরা খুবি কঠিন । তবে তীব্র অ্যাপেন্ডিসাইটিস এ পরিনত না হলে ধরা সম্ভব না।
কেন হয় ?
অ্যাপেনডিসাইটিস কেন হয় তার সঠিক কোন কারন জানা যায় নি । তবে চিকিৎসকের ধারণা যে শরীরের ভিতর কোন কোন বস্তু দ্বারা বাধা প্রাপ্ত হলে দেখা যায় । সেই বস্তুগুলো কি কি হতে পারে ? আর তা হল
১. শারীরিক ট্রমা
২. শক্ত মল
৩. ক্যান্সার ( এটা খুব কম )
এছাড়াও আরও কিছু কারণ থাকতে পারে ।
করণীয়:
১. যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে । প্রয়োজনে সার্জারি করতে হতে পারে । যদি প্রয়োজন হয় অবশ্যই করতে হবে । কেননা এটা মারাত্মক হলে ফেটে যেতে পারে । শুধু তাই নয় মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
২. ডাক্তারের পরামর্শে ঔষধ সেবন করতে হবে ।
৩. সময়ে সময়ে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ রাখতে হবে ।
৪. পানি পান করা জরুরি।
৫. শাকসবজি, ফলমূল ইত্যাদি খাদ্য তালিকায় রাখুন।