পান খাওয়া একটা অতি পরিচিত একটি বিষয় । অনেক লোক আছেন যারা এই পান পাতাটিকে খেয়ে থাকেন । ধূমপান করেন না বটে পান খান । কিন্তু শুধু কি পান তার সাথে রয়েছে চুন, জর্দ্দা, খড় ইত্যাদি। এ সব না হলে পান খাওয়াই হবে না ।
চায়ের দোকানে বসে আছেন , ভাবছেন পান না খেলে হয় ? যেই ভাবা সেই কাজ, পান খেতে বসে পড়লেন। আহ্ কি স্বাদ করেই না খাচ্ছেন পান পাতা । আবার কোন বিয়ের অনুষ্ঠানে গেলেন সেখানেও পানের ব্যবস্থা আছে । ভাবতে লাগলেন না খেলে কি হয় ? ভাবতে ভাবতে আপনি সেখানে পান পাতা খেলেন ।
কিন্তু এই পান পাতা আপনার অজান্তেই ক্ষতি করছে না তো ? কখনো কি ভেবে দেখেছেন ? পান - সুপারিকেই অনেক ক্ষতিকারক মনে করেন না । আর করে থাকলেও খুব কম মনে করেন । এবার আসুন জেনে নেই পান পাতা খাওয়ার ক্ষতিকর দিক।
১.পানে টারফেনলস নামক উপাদান উপস্থিতি থাকে যার কারণে পান পাতা খাওয়ার ফলে ঠোঁট ও জিহবায় লাল দাগ পড়ে।
২.পানের সঙ্গে যে চুন খাওয়া হয়, সেটি হলো ক্যালসিয়াম অক্সাইড বা ক্যালসিয়াম হাইড্রোঅক্সাইড। এই চুন দাঁতের জন্য ক্ষতিকর। চুনে রয়েছে প্যারা-অ্যালোন-ফেনল, যা মুখে আলসার বা ঘা সৃষ্টি করার মাধ্যমে জিহবার স্বাদ নষ্ট করে দিতে পারে। এ আলসার ধীরে ধীরে ক্যান্সারে রূপান্তরিত হতে পারে।
৩.জর্দা হল তামাক জাতীয় একধরনের নেশাজাতীয় দ্রব্য, এই অখাদ্য বস্তুটি সমাজের অনেক মানুষই পানের সাথে মিশিয়ে খেয়ে থাকেন।
ফ্রান্সের আইএআরসি-এর গবেষকদের মতে, যাঁরা তামাকজাতীয় দ্রব্যাদি জর্দা, চুন, কাচাসুপারি, খড় দিয়ে পান পাতা খান তাদের ক্ষেত্রে অন্যান্যদের তুলনায় ‘ওরাল ক্যান্সার’ হওয়ার ঝুঁকি প্রায় পাঁচ গুণ বেশি।
আবার কাঁচা সুপারি উত্তেজক হিসেবে কাজ করে। সুপারিতে রয়েছে উচ্চমাত্রার সাইকোএকটিভ এলকালয়েড। এ কারণেই উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। কাঁচা সুপারি চিবালে শরীরে গরম অনুভূত হয়। এমনকি শরীর ঘেমে যেতে পারে। সুপারিতে রয়েছে এরিকেন ও এরকোলিন এলকালয়েড, যা উত্তেজনার দিক থেকে নিকোটিনের সঙ্গে তুলনা করা যায়।
পানের সঙ্গে চুন, সুপারি, জর্দা প্রয়োগ করা সাধারণভাবে দাঁতের স্বাস্থ্যকে ক্ষতি করতে পারে। এই পদার্থগুলি দাঁতের মড়নের তারতম্য করতে পারে এবং দাঁতের মড়নের উপর যাতে এটি ধরা পরে, সেই সম্ভাবনা রয়েছে। এটি দাঁতের প্রাকৃতিক রঙ পরিবর্তন করতে পারে এবং দাঁতের তরল কণাগুলির নিষ্ক্রিয় গতি বা কায়ম বাড়াতে পারে।
পানের সঙ্গে চুন, সুপারি, জর্দা ব্যবহার করার পর দাঁতে ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকতে পারে, সাধারণভাবে মুখের অংশে যেমন গিংগিভাইভাল ক্যান্সার বা ওসোফাজিয়াল ক্যান্সার। পানের ব্যবহারের সাথে সাথে এই ঝুঁকি বাড়তে পারে। এছাড়া, পানের ব্যবহার হতে দাঁতের ক্যাভিটিজ এবং অন্যান্য দাঁতের সমস্যার ঝুঁকি সহজেই বৃদ্ধি পেতে পারে। আপনার স্থানীয় চিকিৎসকের সাথে আপনার স্বাস্থ্য সম্পর্কে আলোচনা করা গুরুত্বপূর্ণ, যাতে আপনি উচিত নির্দেশনা পেতে পারেন।