ভাত বাঙালি জাতির একটা অপরিহার্য খাদ্য। ভাতের সাথে আমাদের জীবন ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাইতো বলা হয় বাঙালি মাছে ভাতে কাঙ্গালি। এখানে এসেও সেই ভাত ।আমরা যারা ভাত খেয়ে অভ্যস্ত তাদের কিন্তু একেবারে ভাত নাহলে হয় না ।
তবে আমরা বলতে পারি ভাত ছাড়া আমাদের একদিনও চলে না । হয়তোবা অন্যকিছু খেয়ে দিন কাটাই । কিন্তু ভাত ছাড়া কয় দিন ? নিত্য দিনের সঙ্গী এই ভাতের সাথে আর একটি বিষয় আমাদের জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সেটা কি ? সেটা হল ভাতের মাড় । আপনি কি জানেন এই মাড়ের কত উপকারিতা ? ভাতের প্রায়ই পুষ্টিগুণ পানির সাথে চলে যায় । অর্থাৎ জমা হয় ভাতের মাড়ে । আর সেই মাড়কে নাকি আমরা ফেলে দেই । একবার কি চিন্তা করে দেখেছি যে কাজটা কি আমরা ঠিক করছি ? আমাদের শরীর চাল থেকে যে পুষ্টিগুণ পাওয়ার কথা তা পায় না এই মাড় ফেলে দেওয়ার কারণে ।
ভাতের মাড়ে যে উপকার বিদ্যমান তার কিছু উদাহরণ আপনাদের সামনে তুলে ধরছি ।
১. শরীর ও ত্বক:শরীর এবং ত্বককে চাঙ্গা রাখতে ভাতের মাড়ের মত আর কোন বিকল্প পাবেন আপনি ? ত্বক সুন্দর করতে মেয়েরা ইদানিং আবার ছেলেরাও শুরু করছে , কতই মেডিসিন ব্যবহার করছে ? কিন্তু এতে কি ভাল ফল দেয় ? আপনি যদি প্রতিদিন মুখে ভাতের মাড় লাগিয়ে ম্যাসেজ করেন ত্বকের ছিদ্র ছোট হয়ে যাবে , আর সেই সাথে স্কিনের উপর ভাগে জমে থাকা মৃত কোষের আবরণ সরে যাবে । ফলে স্বাভাবিকভাবেই ত্বক সুন্দর হয়ে ওঠে ।
২. শক্তির যোগান দেয়: আপনাদের অনেকে শরীর চর্চা করেন । যদি শরীরচর্চার আগে এক গ্লাস ভাতের মাড় খেতে পারেন ,তবে শরীরে ৮টি উপকারী অ্যামাইনো এসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে, যা ব্যয়ামের সময় পেশির গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আবার একই সঙ্গে ভাতের মাড়ে উপস্থিত কার্বোহাড্রেট শক্তির যোগানে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৩.চুলের সৌন্দর্য প্রকাশে : আপনারা যারা চুলের সৌন্দর্য বিকাশে চিন্তিত , তারা ভাতের মাড়কে বিকল্প হিসেবে নিতে পারেন । কারণ এতে ক্ষতিকর কিছু নেই। তবে সেটা গোসলের আগে ভাতের মাড় চুলে লাগাতে হবে । কিছুক্ষণ পর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। এতে কি হবে ? এতে চুলের গোড়ায় যে পুষ্টির অভাব হয় তা দূর হয়ে যাবে । ফলে চুল পড়া থেকে শুরু করে একাধিক স্কাল্প সম্পর্কিত যে রোগ রয়েছে তার প্রকোপ কমে যেতে শুরু করবে। আবার সেই সঙ্গে বাড়বে চুলের উজ্জ্বলতাও ।
৪.ডায়রিয়া চিকিৎসায় : ডায়রিয়ার চিকিৎসায় ভাতের মাড় ব্যবহার করা হয় । আগে কখনো শুনেছেন কি না জানি না । তবে হ্যাঁ করা হয় । তাই যারা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত তারা ভাতের মাড় খাওয়া শুরু করেন। উপকার পাবেন। কেননা পেট খারাপের সময় এক গ্লাস ভাতের মাড়ে অল্প লবণ দিয়ে খেলে শরীরে উপকারী খনিজের মাত্রা বাড়ে । আর তাইতো রোগের প্রকোপ কমে যেতে শুরু করে।
৫. ব্রণের প্রকোপ কমায় : ব্রণ নিয়ে আমি এর আগে আমার ওয়েবসাইটে লেখা লিখেছি । কিন্তু সেখানে অন্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি । কিন্তু ভাতের মাড় সংক্রান্ত কোন কথা আমি লিখিনি । তাই এখন যেহেতু বিষয়টা ভাতের মাড়ের তাই এখন উল্লেখ করছি । আপনি যদি প্রত্যেক দিন দুবার করে ভাতের মাড় ভাল করে মুখে লাগান তাহলে দেখতে পারবেন আপনার মুখ থেকে ব্রণ কমতে শুরু করেছে । কারণ এর পিছনে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান । ফলে স্বাভাবিকভাবেই ব্রণ কমে যায়।